International Mother Language Day : ভাষা দিবসের দিন পশ্চিমবঙ্গের বাঙালির আত্মানুসন্ধান!
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ জব্বার, রফিক, শফিউল, সালাম, বরকতদের কতটা মনে রেখেছি আমরা? আদৌ মনে রেখেছি? এই ভাষা শহীদদের ভুলে গিয়ে আমরাই কি পূর্ব-পশ্চিম বিভাজন আরও প্রকট করিনি বাঙালির মধ্যে, বাংলার মধ্যে? আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ( International Mother Language Day ) দিন এই ভাবনা এই চিন্তাটা সত্যি কুড়ে কুড়ে খায়! নাকি এটাও আরও একটি ‘দিবসীয়’ ব্র্যান্ডের হাতছানি?
এই মানবসভ্যতা বহু যুগ ধরে জাতের নামে ধর্মের নামে গোত্রের নামে অসংখ্য লড়াই, মৃত্যু, যুদ্ধের সাক্ষী থেকেছে। কিন্তু মাতৃভাষায় কথা বলার অধিকার আদায়ের জন্য যে শয়ে শয়ে মানুষ প্রাণ দিতে পারে তা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারির ( International Mother Language Day ) আগে কেউই ভাবতে পারেনি।
International Mother Language Day
জব্বার, রফিকরা যে বাংলা ভাষার জন্য বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল, সেই বাংলা ভাষাতেই আমরা কথা বলি। এই আমরা মানে পশ্চিমবঙ্গবাসীর কথা বলছি। সেই ভাষা আন্দোলনের সূত্র ধরেই জন্ম হয় স্বাধীন বাংলাদেশের। শুধুমাত্র নিজের ভাষায় কথা বলার জন্য গর্জে উঠেছিল লক্ষ লক্ষ বাঙালি। কিন্তু একটি সামান্য কাঁটাতারের বেড়া পশ্চিমবঙ্গের বাঙালিকে এক আশ্চর্য আত্মবিস্মৃত জাতিতে পরিণত করেছে!
পৃথিবীতে ভাষার ( International Mother Language Day )ভিত্তিতে গড়ে ওঠা প্রথম দেশ বাংলাদেশ। অথচ আমরা তাকে ক্রমশ ধর্মীয় পরিচয়ের গণ্ডিতে আবদ্ধ করে দিলাম। এই আমরা মানে যারা পশ্চিমবঙ্গে তুলনায় অনেক বেশি স্থিতিশীল পরিবেশে থাকি। পশ্চিমবাংলার বাঙালির অবস্থা এমন যে সে আজ নিজের পরিচয় মুছে ফেলতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। সে আর জাতিগত স্বতন্ত্রতায় বিশ্বাস করে না।
সংবিধানে অসুবিধা নেই, হিজাব নিষিদ্ধ হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুজোও বন্ধ করতে হবে!
বরং সব শিকড় উপেক্ষা করে উত্তর ভারতীয় সংস্কৃতি ও ভাষায় অভ্যস্ত হয়ে উঠতে চাইছে। কলকাতা কেন্দ্রিক পশ্চিমবঙ্গবাসীর এই অধঃপতন ও ভোলবদল দেখে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের ‘খাঁটি’ বাঙালিরা। সেটাই স্বাভাবিক। তাইতো বাঙালি বললেই বিশ্বের দরবারে এখন কেবলমাত্র বাংলাদেশের কথা ভেসে ওঠে, ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গের কথা কেউ উল্লেখই করে না!
এতেও আমাদের লজ্জাবোধ নেই। আমরা প্রতিদিন বাংরেজির চর্চা বাড়িয়ে আরও একটু দূরে চলে যাচ্ছি। তাই ২১ ফেব্রুয়ারির লড়াই-সংগ্রামের স্মৃতির সঙ্গে আমাদের তেমন কোনও আত্মিক টান নেই। বর্তমান পরিস্থিতি হল- ওটা রফিক-জব্বারদের বিষয়। ওরা একই জাতের মানুষ নিজেদের মধ্যে হানাহানি করে মরেছে। আমি বাবা কলকাতার কাছে থাকার সুবিধা নিয়ে নিজের আত্ম শ্রীবৃদ্ধিতেই মন দিই! ছিঃ
আসলে ঠিক যেভাবে নিজের মাকে ভুলে যাওয়ার কারণে বৃদ্ধাশ্রমগুলির ক্রমশ শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে, তেমনই বাঙালির এই আহাম্মকির কারণে গোটা দেশের কাছে উপহাসের পাত্র হয়ে উঠেছে পশ্চিমবঙ্গবাসী। থুড়ি, অপদার্থ একদল বাঙালি।