গরু পাচার চক্রের মাথাদের নজর এখন মাটিতে
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে গরু পাচার (Cow Smuggling) মামলা সরগরম হয়ে উঠেছিল রাজ্য রাজনীতি। সেই সময় সিবিআই (CBI) তদন্ত ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ তুঙ্গে ওঠে। ততটা না হলেও সেই ঘটনার রেশ আজও টাটকা বাংলার রাজনীতিতে।
সেইসঙ্গে শুরু হয়েছে কড়াকড়ি। ফলে উত্তর ২৪ পরগনার স্বরূপনগর, বসিরহাট, দেগঙ্গা, বনগাঁর গরু পাচারের পয়েন্টগুলো আপাতত বন্ধ। মুর্শিদাবাদে পয়েন্টগুলোও বন্ধ আছে। একই ছবি উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। তবে মালদহের কালিয়াচকের পয়েন্টার দিয়ে এখনও অল্প বিস্তর পাচার হচ্ছে বলে আমাদের তদন্ত রিপোর্টে উঠে এসেছে। ফলে গরু পাচারের কিংপিনদের এখন নজর মাটিতে (land mafia)।
দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এখন মাটি পাচারের রমরমা। উত্তরবঙ্গের একাংশও এই তালিকায় আছে। ভাগিরথী (Bhagirathi), জলঙ্গি, ইছামতির মাটি থেকে ভালো ইট তৈরি হয়। তাই গরু পাচারচক্রের মাথাদের নজর এখন নদীর মাটির উপর।
সরকারি নিয়মের তোয়াক্কা না করে অবৈজ্ঞানিকভাবে কেটে ফেলা হচ্ছে নদীর মাটি। ফলে গতিপথ পরিবর্তন করছে নদী, যার প্রভাব ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে কৃষিক্ষেত্রে। বদলে যাচ্ছে ভূপ্রকৃতি।
তবে শাসকদলের কল্যাণে বাংলায় এখন প্রমোটারি কারবার জোরদার। ফলে ইমারতি দ্রব্যের চাহিদা তুঙ্গে। স্বাভাবিকভাবেই ইটের বাজার বেশ গরম। ইটভাটাগুলো রমরম করে চলছে। সেখানে মাটির যোগান দিলেই দু’হাত ভর্তি কাঁচা টাকা। তাই গরু পাচার ছেড়ে মাটিতে নজর মাফিয়াদের।
তাছাড়া গরু পাচারের হ্যাপা অনেক। মূলত উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে অনেক লুকোচুরি করে গরু আনতে হয়। একে তাকে নজরানা পৌঁছে দিয়ে, পুলিশ থেকে হোমরা-চোমরা রাজনীতিবিদদের ম্যানেজ করে তবে গরু পাচার হত।
সেখানে জোড়া গরু পাচার করে দিনের শেষে যা পকেটে থাকে তার থেকে এক লরি মাটি ইটভাটায় পাচার করলে লাভ অনেক বেশি। তাই বাংলায় রাজনীতি যোগসাজশে যে পাচারচক্র গড়ে উঠেছে তাদের নজর এই মুহূর্তে সুজলা সুফলা নদীগুলো।
মাটি পাচারের জন্য শুধু শাসক দলের স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করলেই হয়ে যায়। বড়জোর জেলা স্তরের নেতাদের নির্দিষ্ট হিসেব পৌঁছে দিলেই কেল্লাফতে। পাশাপাশি পুলিশের একাংশের মদতও আছে।
রতুয়ার তৃণমূল বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বা বাসন্তীর তৃণমূল বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল সেই অভিযোগই করেছেন। তবে সরকার এখনই বিষয়টি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে না। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে।