সরকার পতনের কারণ সেন্ট মার্টিন
নিজস্ব প্রতিনিধি:- সরকার গঠনের পরেও একটুও উত্তাপ কমছে না বাংলাদেশের। সরকার বদলের কেন্দ্রবিন্দুতে একটি দ্বীপ! এত বিতর্কের সূত্রপাত কোথা থেকে? এর পিছনে কী অন্য কোনও বিদেশী শক্তির মদত রয়েছে? হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ একথা প্রকাশ্যে না বললেও তার ইঙ্গিত দিয়েছেন৷ সূত্রের খবর, সেন্ট মার্টিনেই বন্দর গড়ার পরিকল্পনা ছিল বিদেশী শক্তির। কিন্তু সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ালেন শেখ হাসিনা! কারণ, সেন্ট মার্টিনে বন্দর গড়লে তৃতীয় শক্তি প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক একেবারে তলানিতে ঠেকবে। তা তিনি আন্দাজ করতেই পেরেছিলেন। তিস্তা চুক্তি থেকে শুরু করে একাধিক ব্যবসায়িক চুক্তিতে বিরাট ক্ষতির মুখে বাংলাদেশকে পড়তে হবে৷ এটাও ভালোমতো আন্দাজ করতে পেরেছিলেন তিনি৷ কূটনৈতিক মহলের ধারণা পথের কাঁটা সরাতেই উদ্যোগ নিয়েছে তারা। সেটাই সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের নামে সরকার পতনের আন্দোলনে বারুদ জুগিয়েছে৷
সরকার পতনের আগে বারবার শেখ হাসিনার মুখেও শোনা গেছে তৃতীয় শক্তির কথা৷ বিদেশে বসে তারিক রহমানের মতো নেতারা ছড়ি ঘোড়ালেও এর পিছনে বিরাট শক্তির মদত রয়েছে৷ সেটা ঠারেঠোরে বুঝতে পেরেছিলেন তিনি।
বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন এই মুহুর্তে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার বিষয়বস্তু। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং মিয়ানমারের উপকূল থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে নাফ নদীর মোহনায় অবস্থিত।
২০২৩ সালে এসে রাজনীতিতে সেন্ট মার্টিনের বিষয়টি প্রথম আলোচনার প্রথম সারীতে নিয়ে আসেন আওয়ামী লীগের জোটসঙ্গী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। ১৪ জুন জাতীয় সংসদে সেন্ট মার্টিন ইস্যুতে মেনন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের যারা বন্ধু, তাদের শত্রুর প্রয়োজন নেই। বেশ কিছু সময় আগে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে তার বাগে রাখতে স্যাংশন দিয়েছে। এখন নির্বাচনকে উপলক্ষ করে ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে। এটা কেবল দুরভিসন্ধিমূলকই নয়, তাদের ‘রেজিম চেঞ্জ’-এর কৌশলের অংশ। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সেন্ট মার্টিন চায়, কোয়াডে (যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন কৌশলগত জোট) বাংলাদেশকে চায়। সেই তৃতীয় শক্তি কারা? যারা হাসিনা সরকারের পতন চেয়েছিল?
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য আগেই বলেছেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল কীভাবে? তখন তো গ্যাস বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল। তাহলে এখন তারা দেশ বিক্রি করবে, নাকি সেন্ট মার্টিন বিক্রি করার মুচলেকা দিয়ে আসতে চায়? বিএনপি বনাম আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব শুধুমাত্র আর দ্বীপে সীমাবদ্ধ নেই৷ সরকার পতনের পর অর্ন্তবর্তী সরকার গঠন হয়েছে পড়শি দেশে। এখন সেন্ট মার্টিন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত কী হয়? তা দেখার৷