করোনা প্রাদুর্ভাব : সরকারি নির্দেশিকা মেনেই সতর্ক শাহিনবাগ, অব্যাহত বিক্ষোভ অবস্থান

দ্য কোয়ারি ডেস্ক : করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবেও অব্যাহত দিল্লির শাহিনবাগের ধরনা অবস্থান। করোনা মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই কেন্দ্র ও বিভিন্ন রাজ্য সরকার নানান সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। 

এই রোগের সংক্রমণ নিয়ে গোটা বিশ্বের পাশাপাশি আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে সারা দেশ। কিন্তু এই আতঙ্ক শাহিনবাগের মহিলাদের এতটুকু দূর্বল করতে পারনি। এই পরিস্থিতিতেও নিজেদের অবস্থান থেকে পিছু হটতে নারাজ শাহিনবাগের প্রতিবাদীরা।

তাদের সাফ কথা, সরকার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বা সিএএ, এনপিআর ও এনআরসি প্রত্যাহার করলেই তারা অবস্থান তুলে নেবেন। তাদের দাবি, সরকারি নির্দেশিকা মেনে মাস্ক পরে অবস্থান করছেন তারা।  অবস্থান কেন্দ্রে সানিটাইজারের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। দিল্লি সরকারের নির্দেশিকা অনুযায়ী নিরাপদ দূরত্ব রেখে অবস্থানে বসছেন তারা। একসঙ্গে ৫০ জনের বেশি মহিলা অবস্থানে বসছেন না।

আরও পড়ুনঃ করোনা উপসর্গ দেখা দেওয়ায় এনআরএসে ভর্তি এক  চিকিৎসক পড়ুয়া

অন্যদিকে, করোনা ভাইরাস বা covid19-এর প্রাদুর্ভাবের পর শাহিনবাগের বিক্ষোভ অবস্থান সম্পর্কে বুধবার দক্ষিণ দিল্লির জেলাশাসকের রিপোর্ট চেয়েছে জাতীয় শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশন বা ন্যাশনাল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটস(এনসিপিসিআর)।

covid19-এর প্রতিরোধে কেন্দ্র ও রাজ্য সতর্কতা জারি করার পরও শাহিনবাগে লাগাতার অবস্থান কিভাবে চলছে, তা জানতে চেয়ে দক্ষিণ দিল্লির জেলাশাসককে একটি চিঠি দিয়েছে এনসিপিসিআর। যদিও শাহিনবাগের প্রতিবাদী মহিলারা covid19 প্রতিরোধে সতর্ক বলে জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার প্রতিবাদী এক মহিলা শাহিন কওসর সংবাদ সংস্থা এএনআইকে জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের বিপদ সম্পর্কে প্রতিবাদী মহিলারা যথেষ্ট সচেতন। তারা প্রত্যেকেই মাস্ক পরছেন। প্রত্যেকের ব্যাগে স্যানিটাইজার আছে।

বিক্ষোভ অবস্থান কেন্দ্রে ৫০ জনের বেশি বসছেন না এবং সেক্ষেত্রে পরস্পরের মধ্যে নিরাপদ দূরত্বও রাখছেন। সরকারি নির্দেশিকা মেনেই তারা চলছেন বলে জানান কওসর।

এই প্রতিবাদ লাগাতার চলবে উল্লেখ করে কওসর আরও বলেন, গত তিনমাস ধরে তাঁরা রাস্তায় বসে আন্দোলন করছেন। এখন চুড়ান্ত সময়, কারণ তাদের সাংবিধানিক অধিকার নিয়ে সরকার চিন্তাভাবনা করছে।

গত ডিসেম্বরে সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল  পাশ হওয়ার পর এই আইন এবং এনআরসি ও এনপিআর-এর বিরুদ্ধে পথে নামেন মহিলারা। ১৫ ডিসেম্বর থেকে বিক্ষোভ অবস্থান শুরু করেন।এরপর তাদের এই অবস্থানের তীব্র বিরোধিতা করে বিজেপি।

আরও পড়ুনঃ করোনা আতঙ্কঃ সচেতনতা কর্মসূচী নারায়ণগড়ে

অমিত শাহ থেকে শুরু করে বিজেপির বিভিন্ন স্তরের নেতারা বিভিন্ন ভাবে ওই অবস্থান কেন্দ্র থেকে তাদের তুলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। রাস্তা আটকে আন্দোলনের  বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও হয়। শীর্ষ আদালত আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য মধ্যস্থতাকারীও পাঠায়। কিন্তু শাহিনবাগের মহিলাদের অনড় অবস্থান চলতেই থাকে।

covid19 প্রতিরোধে সতর্কতার আহ্বান জানিয়ে গত মঙ্গলবার প্রতিবাদী মহিলাদের সঙ্গে আলোচনা করে রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে সদস্যরা এবং দিল্লি পুলিশ। কিন্তু সেই আলোচনায় টলাতে পারেনি শাহিনবাগের প্রতিবাদীদের।

উল্লেখ্য, শাহিনবাগের প্রতিবাদীদের অবস্থানের কারণে করোনা ভাইরাস সংক্রামণের বিপদ হওয়ার সম্ভাবনার প্রতি লক্ষ্য রেখে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। 

সম্পর্কিত পোস্ট