আমফান ও করোনা দুই বিপরীতমুখী লড়াইয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক:রাজ্য নেতৃত্বের চরম বিরোধিতা সত্ত্বেও মমতা সরকারের কাজের প্রশংসা না করে পারলেন না প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
শুক্রবার রাজ্যে এসে যেভাবে রাজ্য সরকার একদিকে করোনাভাইরাস, অন্যদিকে আমফান ঘূর্ণিঝড়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে তার ভূয়শী প্রশংসা করেছেন তিনি।
এদিন প্রধানমন্ত্রী রাখ-ঢাক না করেই বলেছেন, সাইক্লোনের বিরুদ্ধে জয় এবং করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মন্ত্র বিপরীতধর্মী। করোনাকে হারাতে গেলে সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। আর সাইক্লোন থেকে বাঁচতে একত্রে নিরাপদ জায়গায় সরে যেতে হবে। বাংলাকে খুব অল্পদিনের ব্যবধানে দুটি বিপরীতমুখী লড়াই লড়তে হচ্ছে। আর দুই লড়াইয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সাফল্যের সঙ্গে লড়ছে বাংলা।
তিনি আরও বলেন, এই লড়াইয়ে বাংলাকে যোগ্য সঙ্গত দিচ্ছে কেন্দ্রও।
করোনা আবহ এবং একে কেন্দ্র করে প্রতি মুহূর্তে কেন্দ্র-রাজ্য যে বিরোধ এর ছবি বিগত কয়েক মাস রাজ্যের মানুষ দেখেছে, তা সত্ত্বেও শুক্রবার রাজ্যে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাজের প্রশংসাই করতে হয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।
বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব চাইছিলে , ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী কেন্দ্রীয় সাহায্য সরাসরি রাজ্যের হাতে না দিয়ে তা দেওয়া হোক উপদ্রুত মানুষের হাতে। এতেই রাজনৈতিকভাবে লাভ বিজেপির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই আবদার করেছিলেন।
কিন্তু এদিন প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা সেই উদ্যোগে সরাসরি জল ঢেলে দিল। কারণ যেখানে রাজ্য সরকার সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কাজ করছে সেখানে রাজ্যকে ডিঙিয়ে কিছু করতে যাওয়া রাজ্যের মানুষ আদেও ভালোভাবে নেবেন তো।
উল্লেখ্য এদিনই প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আমফান বিধ্বস্ত বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পরিদর্শন শেষে বসিরহাটে একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করেন তিনি। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা করেন, রাজ্যে ও কেন্দ্র দুর্গত মানুষদের পাশে রয়েছে। আশু পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে।
মৃতদের নিকট আত্মীয়দের ২ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। গুরুতর আহতদের ৫০,০০০ টাকা দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের ভাই-বোনদের বলছি, এই কঠিন সময়ে কেন্দ্র আপনাদের পাশে রয়েছে। সাইক্লোন আমফান কতটা ক্ষতি করেছে তার খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় দল আসবে। ত্রাণ ও পুনর্গঠনের দিকে নজর দেওয়া হবে। তিনি বলেন, আমরা চাই রাজ্য এগিয়ে যাক।
এদিকে শুক্রবার নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আমফানের ফলে এখনও পর্যন্ত ৮৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
এরমধ্যে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে ২২ জনের , গাছ পড়ে ২৭ জনের, দেওয়াল চাপা পড়ে ২১ জনের, ছাদ পড়ে ৩ জনের, জলে ডুবে ৩ জনের, পাঁচিল ভেঙে ৬ জনের, ঘর চাপা পড়ে ২ জনের, সাপের কামড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে আতঙ্কে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে ।
নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে সাড়ে ১০ লক্ষের বেশি বাড়ি ভেঙে গিয়েছে । ১ কোটির বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত ।