“কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই…”

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ

“কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই

আজ আর নেই

কোথায় হারিয়ে গেল

সোনালী বিকেলগুলো সেই

আজ আর নেই….”

 

মান্না দে’র কন্ঠে এই জনপ্রিয় গানটিতে আজও বুঁদ হয়ে থাকে বাঙালি। তবে সেটা নিছকই নস্টালজিয়া।

কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে এই গানের কথাগুলি কড়া বাস্তবের সঙ্গে হুবহু মিলে যাচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে নিখিলেশ, গোয়ানিস, রমা অমল একই শহরে থাকলেও করোনার কালবেলায় একে অপরের সঙ্গে দেখা করে আড্ডা দেওয়া যেন চাঁদ হাতে পাওয়ার সমান।

করোনার থাবায় আজ বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। আগে অনেকদিন বাদে কোনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে তাকে আলিঙ্গন করে নেওয়া ছিল খুবই সাধারণ ব্যাপার। করোনা কালে সামাজিক দূরত্বের বেড়াজালে আলিঙ্গন তো দূরের কথা, বরং একে অপরের সঙ্গে কথা বললেও মুখে মাস্ক অথবা কেউ কেউ এক্সট্রা সতর্কতার জন্য ব্যবহার করছেন ফেস শিল্ড।

করোনাকে সঙ্গে নিয়ে সর্তকতা অবলম্বন করে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতেই হবে। তাই আনলক ২-এর দ্বিতীয় দিনে খুলে গিয়েছে কলেজ স্ট্রিটের ইন্ডিয়ান কফি হাউজ।

১০০ দিন বন্ধ থাকার পর খুলল কফি হাউজের দরজা। দূরত্ববিধি মেনে  বাঙালি আড্ডার এই চির পরিচিত কেন্দ্র খুললেও কতটা আড্ডা সেখানে এখন জমবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

তবে টানা লকডাউনে যে বাঙালিদের আড্ডা দিতে না পেরে দম বন্ধ হওয়ার জোগার হয়েছিল, কফি হাউজ খুলতে খুশি তাঁরা।

আপাতত ঠিক হয়েছে, সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকবে কফি হাউস। সকলের জন্যেই মাস্ক বাধ্যতামূলক। মাস্ক থাকলেই মিলবে কফি।

মাস্ক ও সামাজিক দূরত্বের বিধি মানা নিয়ে আরও কড়া হল নবান্ন

উল্লেখ্য শুধু অবশ্য কলেজ স্ট্রিটের ঐতিহ্যবাহী কফি হাউস নয়, বৃহস্পতিবার থেকে খুলেছে যাদবপুরের কফি হাউসও।

তবে করোনা আবহে কফি হাউসের দীর্ঘ দিনের মেনু কার্ড আপাতত পালটে যাচ্ছে । এই মুহূর্তে কেবল কফি, ডিম টোস্ট ও ডিম সেদ্ধ পাওয়া যাবে অর্ডারে। অন্যান্য খাবার এখন পুরোপুরি বন্ধ।

প্রথম সপ্তাহের বিক্রি দেখে পরবর্তী মেনু বদলের বিষয়ে ভাবা হবে। কফি হাউসে ঢোকার মুখেই অবশ্য থার্মাল স্ক্রিনিং এবং স্যানিটাইজার ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

তবে, হাজার বিধিনিষেধের মাঝেও সব দিক ভেবেই ফের কফি হাউস খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অপরদিকে, বুধবার কলকাতা পুরসভার পক্ষ কফি হাউস জীবাণুমুক্তকরণ করা হয়। তবে আপাতত কফি হাউসের প্রথম তলই খুলছে। ব্যালকনি খোলা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

কফি ওয়ার্কার কো-অপারেটিভ লিমিটেডের কর্ণধার তপন পাহাড়ি জানিয়েছেন, কফি হাউসে কর্মরত ৬০ জন কর্মীর অধিকাংশই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। আপাতত যে ক’জন আছেন, তাঁদের নিয়েই শুরু করা হবে কাজ।

কফি হাউসের প্রথম তল এবং ব্যালকনি মিলিয়ে মোট রয়েছে ৮৫টি টেবিল। তবে এখন সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিংয়ের জন্য কেবল ২৫টি টেবিলে বসতে পারবেন সাধারণ মানুষ। প্রতিটি টেবিলে ৪টি চেয়ার থাকবে।

সম্পর্কিত পোস্ট