কোভিড টেস্টের ১০ দিন পর মিলল রিপোর্ট! স্রেফ শ্বাসকষ্টের জেরে মৃত্যু রোগীর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ  মৃত্যুর পরে কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ, চিকিৎসা না পেয়ে পথেই মৃত্যু রোগীর। করোনা আবহে চুড়ান্ত অমানবিক ঘটনার সাক্ষী হল উত্তর চব্বিশ পরগনার দত্তপুকুর থানা এলাকার বামনগাছি।

৯ দিন আগে করোনার টেস্ট করেও রিপোর্ট হাতে না পেয়ে এবং চিকিৎসা না পেয়ে জ্বর ও তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগতে থাকা রোগী বছর পঞ্চান্নর বিমল সানি হাসপাতালে পায়ে হেঁটে যাওয়ার পথেই প্রাণ হারালেন।

সূত্রের খবর, সাতদিনের বেশি সময় ধরে রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করেও রিপোর্ট হাতে না পাওয়ার ঘটনা ও বিমল সানির মৃত্যু আরো কতগুলি বাস্তব সমস্যা চোখের সামনে তুলে ধরেছে।

প্রথমত সরকারী স্তরে অসহযোগিতা এবং দ্বিতীয়ত চরম মুহূর্তে জীবনযুদ্ধে লড়তে থাকা রোগীর জন্য অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া। মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ অনুযায়ী গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আশাকর্মীরাই সর্বেসর্বা। তাঁরা নিয়ন্ত্রণ করছেন কে কখন রিপোর্ট পাবে এবং কে কখন ভর্তি হবে।

আগেও উত্তর চব্বিশ পরগণার বনগাঁ হাসপাতালে হাসপাতাল চত্বরে চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারান জনৈক কোভিড রোগী। এগিয়ে আসেননি কেউ।

বনগাঁ হাসপাতালে এক সন্ধ্যা যে অমানবিকতার সাক্ষ্যবাহী তা ৯ দিন ধরে তিলে তিলে ঘটেছে বামনগাছি ও ছোটো জাগুলিয়াতে। তিলে তিলে দশদিন ধরে অসহায় ভাবে মৃত্যুর ছায়া গাঢ় হয়েছে বিমল সানির জীবনে।

জানা গেছে, দশ দিন ধরে জ্বরে ভুগেছেন বিমল সানি। ৯ দিন আগে কোভিড টেস্ট করেছেন ছোটো জাগুলিয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সাত দিন ধরে তাঁর স্ত্রী সন্ধ্যা সানি রিপোর্টের জন্য ঘুরেছেন হন্যে হয়ে। আশাকর্মীদের কাছে চরম অসহযোগিতা পেয়েছেন।

যত্রতত্র পড়ে ব্যবহার করা পিপিই, পুরসভা ও স্বাস্থ্য দপ্তরের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ বিজেপির

বিমল সানির স্ত্রী সন্ধ্যা সানি অভিযোগ করেছেন ছোটো জাগুলিয়ার আশাকর্মীরা প্রথম দিন থেকে শেষ দিন অব্দি অসহযোগিতা করেছেন। প্রাণ দিয়ে আশাকর্মীদের অসহযোগিতার মাসুল দিয়েছেন স্বামী। মৃত্যুর একদিন আগে থেকে শ্বাসকষ্ট তীব্রতর হওয়ার পরে আশাকর্মীরা বেড দিতে অসম্মত হয়।

সন্ধ্যা সানির অভিযোগ বারবার অনুরোধ করা সত্বেও আশা কর্মীরা সোয়াব টেস্টের রিপোর্ট দেননি। শ্বাসকষ্ট চরম হতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে এরকম উপসর্গ যুক্ত রোগী কোথাও ভর্তি নেবে না।

তথাপি বাঁচার শেষ খড়কুটো আঁকড়ে বারাসাত যেতে গিয়ে পথেই মৃত্যু রোগীর। মৃত্যুর পরে জানা গেল বিমল সানি কোভিড নেগেটিভ। অর্থাৎ স্রেফ শ্বাসকষ্টে ভুগে মৃত্যু তার। আবার প্রশ্নচিহ্নের মুখে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো।

সম্পর্কিত পোস্ট