রাজধানীর ‘তখত’ থেকে মোদী উচ্ছেদ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরতে পারেন বরুণ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে লোকসভা নির্বাচনের সলতে পাকানোর কাজ। যেনতেন প্রকারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল জাতীয় কংগ্রেসে প্রধান বিজেপি বিরোধী মুখ হয়ে উঠতে রাজনৈতিক লড়াই শুরু করে দিয়েছেন।
ইতিমধ্যেই ত্রিপুরা পাখির চোখ করে চলছে লাগাতার ঘাসফুলের প্রচার। অন্যদিকে গোয়া ও মেঘালয়ের মাটিতেও ঘাসফুলের বীজ বুনতে শুরু করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কংগ্রেস এবং বিজেপি থেকে বেশ কয়েক জন নেতা চলে গিয়েছেন তৃণমূলে। অদূর ভবিষ্যতে সেই তালিকায় বরুণ গাঁধীও যুক্ত হতে চলেছেন কি না, তা নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে রাজধানীর মাটিতে।
আগামী সপ্তাহে রাজধানীতে আসছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আসন্ন সফর জাতীয় রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ বলেই আজ জানিয়েছেন দলের এক শীর্ষ নেতা। গোয়ায় মমতার সফরের সময়ে দলে যোগ দিয়েছিলেন টেনিস তারকা লিয়েন্ডার পেজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি থাকাকালীন তেমন ‘চমক’ দেখা যাবে কি না, তা অবশ্য স্পষ্ট করা হয়নি তৃণমূলের পক্ষ থেকে।
দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, “বিজেপি-র উপর যে সব নেতা ক্ষুব্ধ, কিন্তু কংগ্রেস যাওয়ার জায়গা নেই, তাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। এই মুহূর্তে মমতা তথা তৃণমূল কংগ্রেসই যে মোদীকে রুখতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা নিতে পারেন, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।”
বিষপানকারী ৫ জন সহ আদিগঙ্গায় নেমে বিক্ষোভ দেখানো শিক্ষক-শিক্ষিকারা মইদুলের নেতৃত্বে ভিড়ছেন তৃণমূলে
বরুণ গান্ধীর সঙ্গে বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সম্পর্ক সম্প্রতি অত্যন্ত তিক্ত হয়েছে। লখিমপুরকান্ডে বিজেপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন সপুত্র মেনকা গান্ধী। বাদ পড়েছেন বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির তালিকা থেকেও। এরপর গান্ধীজির জন্মদিনে নাথুরাম গডসের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন বরুণ।
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, বিজেপি ছাড়লে তাঁদের একটি নতুন রাজনৈতিক মঞ্চের প্রয়োজন হবে। অথচ কংগ্রেসে বরুণের যাওয়া সম্ভব নয়। তাই বিকল্প প্রতিপক্ষ হিসাবে তৃণমূলেই যোগদান করতে পারেন তিনি। তবে মেনকা গান্ধীর বিষয়টি এখনো স্পষ্ট নয়।
বরুণের পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসে সম্ভাব্য অতিথির তালিকায় রয়েছেন জেডিএস থেকে বিএসপি-তে যোগ দেওয়া দানিশ আলি। গত বছর তাঁর সঙ্গে মতান্তরের জেরে তাঁকে লোকসভার নেতার পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মায়াবতী।
বিরোধী জোটের প্রধান মুখ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস স্বাভাবিকভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নানা ভাবে তুলে ধরতে চাইছে। কিন্তু এই রাজনৈতিক বাস্তবতাকেও তারা অস্বীকার করতে পারছে না যে দেশের একশোটিরও বেশি আসনে লড়াইটা সরাসরি বিজেপি-র সঙ্গে কংগ্রেসের। সেখানে তৃণমূল তো বটেই অন্য কোনও আঞ্চলিক দল ময়দানেই নেই।
বৃহস্পতিবার নাগপুরের একটি অনুষ্ঠানের পর এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ারও জোট-নেতৃত্বের বিতর্কটি উস্কে দিয়েছেন। তাঁর কাছে নির্দিষ্ট ভাবে জানতে চাওয়া হয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীই কি ভবিষ্যতে বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেবেন? পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ পওয়ারের জবাব, “জোটের নেতা কে হবেন, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বাছাই করে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত। মানুষ কী চাইছেন তা বোঝা প্রয়োজন। মানুষের আশা পূরণ করার জন্য আমাদের অনেক দলের সমর্থন নিতে হবে।”