এবার সিবিআই নাকি উচ্চ আদালত? মৃত আনিসের ন্যায়বিচারের জন্য আর কত অপেক্ষা করতে হবে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মেধাবী ছাত্রনেতা, ছাত্রসমাজের লড়াইয়ের প্রতীক আনিস খান মারা গিয়েছেন সাড়ে তিন মাসের বেশি হয়ে গেল। কিন্তু এখনও এই হত্যা মামলার নিষ্পত্তি হল না। অথচ নবান্ন থেকে বলা হয়েছিল ১৫ দিনের মধ্যে আনিসের রহস্যময় মৃত্যুর তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কিন্তু আইন-আদালতের ফাঁকফোকরকে কাজে লাগিয়ে শুধু দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। আর ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তির প্রতীক্ষায় আমতার সারদা গ্রামের বাড়িতে বসে চোখের জল ফেলছেন বৃদ্ধ সালেম খান। তাঁর একটাই প্রশ্ন, কোথায় গেলে ছেলের জন্য ন্যায় বিচার পাবেন!

আনিস খানের মৃত্যুর রহস্য নিয়ে ঘটনার শেষ নেই। তাঁর পরিবারে গোড়া থেকেই দাবি করে আসছে আমতা থানা থেকে তিনজন পুলিশকর্মী এসে তাদের ছেলেকে খুন করেছে। স্থানীয় বিধায়ক ও হাওড়া গ্রামীণ পুলিশ জেলার সুপারের দিকে বারবার আঙুল তুলেছেন তাঁরা।

যদিও গোড়া থেকেই প্রশাসন যেন পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ খারিজ করতে ব্যস্ত ছিল।প্রাথমিকভাবে আনিসের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্তে বিশেষ আগ্রহ ছিল না পুলিশের।

কিন্তু ব্যাপক আন্দোলন, কলকাতা হাইকোর্টের ধমকের জেরে কবর থেকে আনিসের দেহ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হয়। তবে, “যে পুলিশ খুন করেছে তারা কখনও আমার ছেলের ন্যায়বিচার দিতে পারবে না”, এই দাবি তুলে গোড়া থেকেই সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছেন আনিসের বাবা সালেম খান। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর সেই দাবি মানেনি। খোদ মুখ্যমন্ত্রী নিজে এই বিষয়ে একটি সিট গঠন করে তদন্ত পরিচালনার নির্দেশ দেন।

ক্যান্সার যোদ্ধা সোমা চাকরি পেয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ‌ও জানিয়েছেন বিচারপতি, কিন্তু বাকিদের কী হবে

সেই সিট প্রাথমিকভাবে ১৫ দিন সময় চাইলেও আজ সাড়ে তিন মাস হয়ে গিয়েছে, এখনও তদন্তের নিষ্পত্তি হয়নি। মাঝে তারা একবার দাবি করেছিল আনিসের খুনে পুলিশের কোন‌ও ভূমিকা নেই। তবে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে আনিস খান মৃত্যু মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। এবার রায় দেওয়ার পালা।

এখন সর্বত্র কৌতুহল, রায় কী হবে। আনিসের পরিবার একটা বিষয় স্পষ্ট জানিয়েছে, যদি অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী এবং তার কর্তাদের শাস্তি না হয় তবে তারা সিবিআই তদন্ত চেয়ে সুপ্রিমকোর্টে যাবে। আইনজীবী মহলের একাংশের ধারণা সিটের রিপোর্টে সন্তুষ্ট না হলে কলকাতা হাইকোর্ট সরাসরি সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। সেক্ষেত্রে আর একবার অস্বস্তিতে পড়বে রাজ্য সরকার।

কিন্তু এ তো গেল আইন-আদালতের বিষয়। এই সমস্ত জটিলতার ফাঁক গলে শেষ পর্যন্ত আনিসের হত্যাকারীরা ছাড় পেয়ে যাবে নাতো? এই প্রশ্নটাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। আনিসের পরিবারের আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, এই প্রতিবাদী ছাত্র নেতার মৃত্যুর যদি সঠিক ন্যায়বিচার না হয় তবে দেশের আইন ব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা চলে যাবে। কেউ আর পুলিশকে বিন্দুমাত্র ভরসা করবে না”।

সম্পর্কিত পোস্ট