সম্ভবনাময় কংগ্রেসের পথের কাঁটা বিজেপি নয়, বরং সঙ্গীরা

শুভজিৎ চক্রবর্তী

জাতীয় রাজনীতিতে (National Politics) সবচেয়ে পুরাতন দল নিজেদেরকে বিজেপির (Bjp) বিকল্প বলে প্রচার করছেন। কিন্তু সেই বিজেপির বিকল্পের লড়াইয়ে এখন এগিয়ে এসেছে অন্যান্য দলগুলিও৷ ফলে যে সমস্ত রাজ্যে কংগ্রেসের(congress) সম্ভাবনা রয়েছে, সেই রাজ্যে কংগ্রেসের পথের কাঁটা বিজেপি নয়। বরং কংগ্রেসের পথের কাঁটা হচ্ছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি।

আগামী বছরে চার রাজ্যের নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে. (uttarpradesh) কংগ্রেসের(congress) লড়াই অনেকটাই কঠিন হবে৷ সেকারণেই এখন থেকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে( priyanka gandhi )সামনে রেখেই নির্বাচনের ময়দানে নামতে চাইছেন ২৪ নম্বর আকবর রোডের নেতারা।

কিন্তু বিজেপি বিরোধী ভোট কাটতে সেখানেও পা বাড়িয়ে রেখেছে সমাজবাদী পার্টি(samajwadi party), বহুজন সমাজবাদী পার্টি (Bahujan samajwadi party) সহ অন্যান্য দলগুলি। বহু কংগ্রেস নেতা ইতিমধ্যেই অখিলেশ যাদবের ( akhilesh yadav) সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। গত বিধানসভা নির্বাচনে মাত্র ৭ টি আসন পাওয়া কংগ্রেস কী ঘুরে দাঁড়াতে পারবে?

কিন্তু উত্তরাখণ্ডে (uttarakhand) এবার কংগ্রেসের সম্ভাবনা প্রবল। সেখানে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (arvind kejriwal) দল লড়াইয়ের সিদ্ধান্ত নিলেও খুব বেশী ফায়দা করতে পারবে বলে মনে হয় না। পাঞ্জাবের (punjab) দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে সিধু বনাম ক্যাপ্টেন সিংয়ের লড়াইয়ের আগে অবধি স্থির ছিল এবারেও পাঞ্জাবে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে।

কারণ, কৃষক আন্দোলনকে (farmers protest) সরাসরি সমর্থন জানিয়েছেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং(Captain amrindar singh)৷ সেদিক থেকে অনেকটাই পিছনে থাকতেন আম আদমি পার্টি (aam admi party)এবং শিরোমণি আকালি দল (siromani akali dal)।

সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংয়ের ইস্তফা দেওয়ার কারণে সেই সমীকরণ কিছুটা বদলে গেছে। নতুন দল গঠন করে ছোট দলগুলির সঙ্গে জোটবদ্ধ হতে চাইছেন ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। তাঁর সমর্থনে এগিয়ে এসেছে বিজেপি।

বর্ষীয়ান কংগ্রেস ঘরানার নেতার জন্য জোটের রাস্তা খুলে রেখেছে শিরোমণি আকালি দলও। তাই পাঞ্জাবে কংগ্রেসের ১০০ শতাংশ ক্ষমতায়নের হার এখন অনেকটা কম বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

অন্যদিকে, গোয়ার ( goa)রাজনৈতিক পালাবদলে বিজেপির পরিবর্তে কংগ্রেসের সম্ভাবনা ছিল প্রবল। কিন্তু প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লুজিনহো ফেলেরিওকে সামনে রেখে নির্বাচনী লড়াইয়ের ঘুটি সাজাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস (Tmc)।

কিছুমাস আগেই ১০ জনপথ রোডে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পরেও তাঁর দল থেকে লোক নিয়ে ভিন রাজ্যে সংগঠনের বিস্তার ঘটাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (mamata banerjee)। চলতি মাসের শেষের দিকে গোয়ায় গিয়ে নয়া কর্মীদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেবেন তিনি। গোয়ায় কংগ্রেসের(congress) সম্ভাবনার এখন পথের কাঁটা তৃণমূল।

একই ঘটনা মেঘালয়েও। সেখানেও বিরোধী দলনেতা মুকুল সাংমাকে ঘিরে আলোচনা কম হচ্ছে না। অসমে সুস্মিতা দেবের তৃণমূলে শিবির বদল এবং এআইডিইউএফের (AIDUF) সঙ্গে জোটের সমাপন ঘোষণা মোটেই ভালো ইঙ্গিত নয়।

ত্রিপুরাতে (tripura )তৃণমূলের উত্থান এবং কংগ্রেস ভেঙে একের পর এক নয়া দল গঠন কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে সরাসরি প্রভাব ফেলবে।

বিহারের নির্বাচনে আরজেডির নেতৃত্বে এনডিএ(NDA) শিবিরের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছিল কংগ্রেস (congress)। কিন্তু উপনির্বাচনে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী ঘোষণা করেছে আরজেডি(RJD) এবং কংগ্রেস। আবার আরজেডি ভেঙে নতুন দল গঠন করে ভাই তেজস্বীকে (tejaswai yadav) চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন তেজপ্রতাপ।

তামিলনাড়ুতে রাজ্যসভার দুটি আসনের মধ্যে একটির আশায় ছিলেন কংগ্রেস নেতারা। কিন্তু দুটি আসনেই নিজেদের দলের লোককেই প্রার্থী করতে চাইছে এআইডিএমকে( AIDMK)। ফলে সেরাজ্যেও জোট নিয়ে জট পাকাতে শুরু করেছে।

মহারাষ্ট্রের মহাআগাধি জোটের অবস্থা ভালো নয়। দাদার এবং নগর হাভেলি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থী ঘোষণা করেছে শিবসেনা (shivsena) এবং কংগ্রেস। যা বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা আরও বাড়িয়ে দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ।

২৪ নির্বাচনের( loksabha election 2024) দিকে তাকিয়ে এখন থেকে ঘুটি সাজাচ্ছে সমস্ত দলগুলি। আগামী দিনে একাধিক রাজ্যের নির্বাচনের ফলাফলের ওপরেই নির্ভর করবে বিরোধী নেতৃত্বের মার্কশিট।

শুধুমাত্র হিন্দিভাষী অধ্যুষিত এলাকার ভোটে বিজেপিকে কায়দা করতে পারবে কংগ্রেস? নাকি একসময়ের রাজনৈতিক সঙ্গীরাই পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে কংগ্রেসের?

সম্পর্কিত পোস্ট