স্বর্ণ ধান চাষে বিপুল সাফল্য রাজ্যের, এবার শুরু হল কালো ধানের চাষ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ একদিকে বাঙালির পাতে হারিয়ে যাওয়া সুগন্ধি ভাতের আঘ্রাণ ফিরিয়ে দেওয়া। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে মা ও শিশুদের পুষ্টিকর চাল সরবরাহের ব্যবস্থা করা। এই দ্বিমুখী লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রথাগত ধান চাষের পাশাপাশি শুরু হয়েছে নতুন প্রজাতির ধান চাষ। যার মধ্যে অনেক প্রজাতির ধানের চাষ একদা প্রচলিত থাকলেও অধুনালুপ্ত।

মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা মতো উপকূলবর্তী নোনা জল এবং. পলিমাটি এলাকায় নোনা স্বর্ণ ধান চাষ করে সাফল্য পেয়েছে রাজ্য। পাশাপাশি বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার শুষ্ক মাটিতে শুরু হয়েছে কালো ধান হিসেবে পরিচিত আরেক প্রজাতির ধান। ভিটামিন সমৃদ্ধ এবং রোগ প্রতিরোধক বলে যার খ্যাতি রয়েছে।

কৃষি মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন নতুন উৎপাদিত এইসব ধান বিক্রি করে চাষীরা যাতে আয় করতে পারে সেজন্য রাজসরকার বিপননেরও ব্যবস্থা করবে।অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের হাতিয়ার হিসেবে আয়রন ও জিঙ্ক সমৃদ্ধ পুষ্টিকর ধান উৎপাদনের জন্য গবেষণার কাজ চলছে রাজ্যে।

রাজ্য কৃষিদপ্তরের অধীন চুঁচুড়ার ধান গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা এব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছেন। কয়েক বছরের মধ্যে এই কাজে সাফল্য পাওয়ার আশা করছেন তাঁরা। এই ধান গবেষণা কেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা ইতিমধ্যে বেশকিছু বিশেষ ধরনের ধানবীজ উৎপাদন করতে সফল হয়েছেন, যেগুলি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ফলন দেয়।

এর মধ্যে লবণাক্ত জলে ও বন্যার জমা জলের মধ্যে চাষ করার উপযুক্ত ধান রয়েছে। ভূগর্ভস্থ জলে বেশি মাত্রায় আর্সেনিকপ্রবণ এলাকায় চাষ করার জন্য বিশেষ ধরনের ধান উদ্ভাবন করেছেন এখানকার বিজ্ঞানীরা। ওই ধানে ক্ষতিকর আর্সেনিকের পরিমাণ বিপদসীমার নীচে আনা সম্ভব হয়েছে।

বিদায় নিচ্ছে শীত, রবিবার রাজ্য জুড়ে বৃষ্টির সম্ভাবনা

কেন্দ্রীয় কৃষি গবেষণা সংস্থা ‘আইসিএআর’ অনুমোদন নিয়ে ওইসব ধানবীজের উৎপাদন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের কৃষি বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে তাঁরা পুষ্টিকর ধান উৎপাদনে সাফল্য পাবেন।

গরিব মানুষ, বিশেষ করে শিশু ও মহিলাদের মধ্যে অপুষ্টিজনিত সমস্যা দূর করার উদ্দেশে আয়রন ও জিঙ্কসমৃদ্ধ ধান উৎপাদন সারা বিশ্বের কৃষি বিজ্ঞানীদের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

ম্যানিলার ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্চ ইনস্টিটিউট-সহ অনেক দেশে কৃষিবিজ্ঞানীরা এই কাজ করছেন। চুঁচুড়া ছাড়াও দেশের কয়েকটি সরকারি ধান গবেষণা কেন্দ্রে এই কাজ চলছে। জিন প্রযুক্তির সাহায্যে পুষ্টিকর ধান উদ্ভাবনের প্রক্রিয়া চলছে। বিভিন্ন ধরনের উচ্চফলনশীল এবং হাইব্রিড জাতীয় ধান উদ্ভাবনে মূলত জিন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।

গবেষণা সংস্থা সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখানে সৃষ্ট শতাব্দী অগ্নিবোরা, জয়াসিলেট প্রভৃতি প্রজাতির ধানে জিঙ্ক ও আয়রনের মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু ধান ভানিয়ে রাইস মিলে চাল উৎপাদনের সময় পুষ্টিকর পদার্থগুলির বড় অংশ তুষের সঙ্গে চলে যায়।

তাই চালের অংশে আয়রন, জিঙ্ক ধরে রাখতে হবে। সেই চেষ্টাই চালাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। রাজ্যের পরিবেশ, মাটি যাতে এই ধানের ফলনের উপযুক্ত হয় সেটা পরীক্ষামূলক চাষের মাধ্যমে আগে নিশ্চিত করতে হবে তাঁদের।

সম্পর্কিত পোস্ট