বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞার আবেদনে হাইকোর্টে মামলা, অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছেন ৩১ লক্ষ বাজি ব্যবসায়ী

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ করোনা আবহে এবার বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারির আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হল কলকাতা হাইকোর্টে।বৃহস্পতিবার মামলাটির শুনানি হতে পারে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

এতেই অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছেন বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৩১ লক্ষ মানুষ। কেবলমাত্র মহেশতলা-বজবজ এলাকাতেই বাজি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত আছে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ।

সেই মহেশতলা-বজবজ আতশবাজি সমিতির সম্পাদক শুকদেব নস্কর জানালেন যদি মহামান্য আদালত তাদের বিপক্ষে রায় দেয় সেক্ষেত্রে প্রায় ৩১ লক্ষ মানুষ রুজিরুটি হীন হয়ে পড়বে। আজ থেকে পাঁচ মাস আগেও যদি এমন কোনো রায় ঘোষণা করা হতো সে ক্ষেত্রে এই বাজি ব্যবসায় কেউই এত কোটি টাকা লগ্নী করত না। তার মতে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই এই ব্যবসায় লগ্নি করা হয়েছে। তাদের আশা মহামান্য আদালত শিল্প এবং পরিবেশ এই দুইয়ের সহাবস্থানকে মাথায় রেখেই কোন রায় দেবেন।

করোনা আতঙ্কে এবার ম্লান হয়ে গিয়েছে দুর্গাপুজো। জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে সংক্রমণ ঠেকাতে সমস্ত পূজো মন্ডপকে দর্শকশূন্য রাখার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। এবার কালী পুজো নিয়েও মামলা আদালত পর্যন্ত গড়াল।

দুর্গাপূজায় যিনি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন তিনিই আবার হাইকোর্টে বাজি পোড়ানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন জানান। কালীপুজো, ছট পুজো সহ অন্যান্য উৎসবের সময় সর্বত্র বাজি বিক্রি বন্ধ রাখার আর্জি জানিয়েছেন ওই মামলাকারী।

উল্লেখ্য, এবছর করোনা পরিস্থিতিতে বাজি না পোড়ানোর জন্য আবেদন জানিয়েছেন চিকিৎসক মহলও। তাদের বক্তব্য বাজির মাধ্যমে সহজেই মানুষের শরীরে প্রবেশ করতে পারে করোনাভাইরাস। তার ওপর বাজি পোড়ানো হলে বাতাসে দূষণের মাত্রা বাড়বে। সে ক্ষেত্রে করোনা আক্রান্তদের শ্বাসকষ্টের সমস্যা আরো বাড়তে পারে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/the-temperature-is-dropping-due-to-the-frosty-wind-signaling-that-winter-is-coming/

মঙ্গলবার কালীপুজোর প্রস্তুতি, বিসর্জন এবং আতশবাজির ব্যবহার— এই তিনটি বিষয়ে প্রশাসন এবং পুলিশের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান,  “মানুষ, ক্লাব, পুজো কমিটি, প্রশাসনের সহযোগিতায় দুর্গাপুজো যেমন সুন্দর ভাবে হয়েছে, তেমনই সকলের সহযোগিতায় বাজি এড়িয়ে সংযত ভাবে কালীপুজো এবং দীপাবলি পালন করতে হবে। অতিমারি চলছে। শ্বাস এবং অন্যান্য রোগের সমস্যা রয়েছে। অনেকে রোগী হাসপাতাল এবং হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন। মানবিক দিক থেকে দেখে সকলেরই বোঝা কর্তব্য, এই সময় বায়ুদূষণ তাঁদের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে, কেউই বাজি পোড়ানোর দিকে যাবেন না। সুপ্রিম কোর্ট বা অন্যান্য বিচারে নিষিদ্ধ, মাত্রার উপরে থাকা বাজি ব্যবহার করবেন না। তার উপরেও আমাদের আবেদন কেউই যেন বাজির ব্যবহার না করি। বাজি এড়িয়ে চলব, তা থেকে বিরত থাকব। আমাদের আনন্দ যেন অন্যের নিরানন্দের কারণ না হয়।”

তবে বাজি-নিয়ন্ত্রণে কড়া পদক্ষেপের আর্জিও জানিয়েছে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ।  অনেকে মনে করেছিলেন, করোনা আবহে বাজি নিয়ে নির্দিষ্ট বিধি ঘোষণা করবে সরকার। যদিও পুলিশকর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, এ বছরও নিষিদ্ধ বাজি ধরতে অভিযান চলবে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি না করলে কি আমজনতার মধ্যে সংযম থাকবে তো?

সম্পর্কিত পোস্ট