ডোর টু ডোর ক্যাম্পেন থেকে ডিজিটালে প্রচার ঝড় ,বঙ্গে বাজিমাত সময়ের অপেক্ষা বিজেপির !

সহেলী চক্রবর্তী

দুর্গাপুজো-কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো-কালীপুজো-ভাইফোঁটা-কার্তিকপুজো সমাপ্ত। ছোটবেলায় আমরা কমবেশী সকলেই পুজো কাটার পরপরই মা-বাবার বকুনির ভয়ে পরীক্ষার জন্য পড়তে বসে যেতাম। সেই সঙ্গে মা-বাবাকে অভয় দিয়ে বলতাম রেজাল্ট ভাল হবে। কেউ কেউ আবার বেঁধে দিত মার্কস-ও। ভাইফোঁটার সন্ধ্যায় বঙ্গ বিজেপির সহকারী কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক অমিত মালব্যের উপস্থিতি ছোটবেলার সেই স্মৃতিকেই উসকে দিল।

২০২১ এর নির্বাচন বাম-কংগ্রেস জোট, বিজেপি এবং তৃণমূলের কাছে বিরাট পরীক্ষা। এর ফলাফলেই নির্ভর করবে আগামীতে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার কোন পথে যাবে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ঝাঁপিয়ে পড়েছে সকলেই।

জান-প্রাণ লড়িয়ে দিচ্ছেন ফুল মার্কস পাওয়ার। যদি ফুল মার্কস নাও হয় নিদেনপক্ষে স্টার(পড়ুন ম্যাজিক ফিগার) মার্কস যেন হয়। কারণ দলের শীর্ষ নেতৃ্ত্বের যে অনেক আশা তাদের উপর।

উৎসবের রেশ কাটতে না কাটতে বাংলার মাটিতে অমিত মালব্যর আগমণ মনে করিয়ে দিল পরীক্ষার বেশী দেরী নেই। এদিন বিমান বন্দরে নেমে সরাসরি সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখি তিনি দাবি করেন, ‘২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসবে বিজেপি।’ তাঁর আত্মবিশ্বাস তারিফ যোগ্য বটে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/from-now-on-trinamool-leaders-will-sit-regularly-in-trinamool-bhaban/

এরাজ্যের বিজেপির সহকারী কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ছাড়াও অমিত মালব্য বিজেপির দলের আইটি সেলের সর্বভারতীয় আহ্বায়ক। আর এতদিন তিনি বিজেপির টেকনিক্যাল বিষয়ে পারদর্শিতা দেখালেও রাজনীতির ময়দানে এই প্রথমবার মুখোমুখি ম্যাচ খেলতে নামলেন। তাও আবার যেটা কিনা বিজেপির প্রেস্টিজ ইস্যু।

মঙ্গলবার কলকাতায় বৈঠকে বসছেন বিজেপির রাজ্য ও শীর্ষ নেতৃত্ব। থাকবেন বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরাও। সেখানেই উপস্থিত থাকবেন অমিত মালব্য। এই বৈঠকে বিজেপির রাজ্য স্তরের আইটি সেলে রদবদলের সম্ভাবনাও রয়েছে বলে দলীয় স্তরে শোনা গিয়েছ।

বলে রাখা প্রয়োজন এদিন বাম-কংগ্রেসের নেতৃত্বরাও তাদের পরবর্তী কার্যপ্রণালী ঠিক করতে বৈঠকে বসবেন বলে জানা গিয়েছে।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/to-make-a-roadmap-for-bidhansabha-election-left-and-congress-will-met-tuesday/

এরাজ্যে দুর্গাপুজোর প্রাক্কালে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সফরে এসেছিলেন। একগুচ্ছ টাস্ক দিয়ে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা-কর্মীদের। ফর্মূলায় অঙ্ক মিলছে কিনা, নাকি অঙ্ক মেলাতে বিকল্প কিছু পন্থা নেওয়া যায়, তা দেখতে সম্প্রতি দুদিনের রাজ্য সফরে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

সেই সফরে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের তৎপরতা দেখে রাজ্য ছাড়ার আগে চওড়া হাসিতে অমিত শাহ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন সঠিক পথে এগোচ্ছে গেরুয়া বাহিনী। তারপর অবশ্য ফের রাজ্যের নেতৃত্বরা দিল্লিতে বৈঠকে গিয়েছিলেন অমিত শাহের ডাকে সাড়া দিয়ে।

এরপরই বিজেপির রাজ্য স্তরের রদবদল ঘটান নাড্ডা। সেখানে দেখা যায় বাংলায় বিজেপির মূল দায়িত্ব থাকছে কৈলাশ বিজয়বর্গীয় ঘাড়েই। সহকারী হিসাবে থাকছেন অরবিন্দ মেনন ও অমিত মালব্য।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে দেশজুড়ে বিজেপির অভাবনীয় সাফল্য এবং রাজ্যের ১৮ টি সিট দখলে ডোর টু ডোর ক্যাম্পেন যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিল তেমনি বাজিমাৎ করতে সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারের ব্যাপকতা ছিল মারাত্মক।

সর্বভারতীয় একটি দলের দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গে পার্টি অফিসে একটি আলাদা সেকশন রয়েছে আইটি সেলের। বিজেপির উত্থান থেকে গড়গড়িয়ে এগিয়ে যাওয়ার নেপথ্যে যারা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে দায়ী।

তাই এরাজ্যে পাহাড় থেকে জঙ্গলের মাটি চষে বেড়ানোর পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়াকে ইলেকশন ক্যাম্পেনিং কে স্টেজ হিসাবে ব্যবহার করা বিজেপিকে নিঃসন্দেহে এক্সট্রা মাইলেজ এনে দিয়েছে।

অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদীর ডিজিটাল ইন্ডিয়া গঠনের লক্ষ্য এবং সর্বোপরি করোনা পরিস্থিতিতে ভার্চুয়াল মাধ্যমকে একাত্ম করে এগিয়ে যাওয়া বিজেপির টার্গেট বাংলার অন্যতম কর্মসূচি।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/mamata-canceled-the-vaifonta-ceremony-at-home-in-corona/

সেই লক্ষেই এবার একদা ব্যাঙ্ক কর্মী ও বর্তমানে আইটি সেলের প্রধান আহ্বায়ককে এরাজ্যের ভোট বৈতরণী পার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ডিজিটাল প্রচারে যেমন থাকবে সোশ্যাল ডিসটেন্স তেমনি থাকবে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার অভিনব সুযোগ। এর থেকেই স্পষ্ট বঙ্গের মাটিতে ঘাসফুল উপরে ফেলে তখত দখলে কতটা মরিয়া বিজেপি।

প্রসঙ্গত, একের পর এক কর্মসূচির মাধ্যমে ডিজিটাল মিডিয়ায় প্রচারে ঝড় তুলতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। আর অমিত মালব্য এদিনের বৈঠকের পর তার ‘টেক’ ফর্মূলা কাজে লাগিয়ে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়বেন তা জলের মত পরিস্কার।

এদিক থেকে দেখলে ডিজিটাল প্রচারে যেকোন দলকে বলে বলে গোল দিতে পারে বিজেপি। নির্বাচনের আগে ক্রমশ জমে উঠছে ময়দান। অপেক্ষা করছে আর কী কী ভোলবদলের তা ক্রমশ প্রকাশ্য…

সম্পর্কিত পোস্ট