আগামী নির্বাচনে নতুন ফ্রন্ট্রের মুখ মমতা!

।। শুভজিৎ চক্রবর্তী ।। 

রবিবার ৫ রাজ্যের ফল ঘোষণার পর আরও আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একইসঙ্গে তিনি এটাও প্রমাণ করে দিয়েছেন এই মুহুর্তে দেশের মধ্যে অন্যতম বিজেপি বিরোধী মুখ তিনিই। তবে কি এখান থেকেই ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে নতুন ফ্রন্টের রূপরেখা তৈরির কথা ভাবছেন তৃণমূল সুপ্রিমো? সোমবার এই প্রশ্নের জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছিলেন, এখনও অবধি কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তিনি একা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে অন্যান্য দলগুলির একজোট হওয়া প্রয়োজন।

১৯ এর নির্বাচনের আগে ব্রিগেডের মঞ্চে সমস্ত দলের রথী মহারথীদের এনে জোটের বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির বিরোধিতায় সেই ছক কষে রেখেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মার্চ মাসেই দেশের ১৫ টি বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে একজোট হওয়ার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। তিনি লিখেছিলেন, গণতন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে বিজেপি গত ৬ বছর ধরে যেভাবে আঘাত হানছে সেখানে সকলকে একজোট হওয়া দরকার। মমতার সদর্থক চিন্তায় সমর্থন জানিয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার, আরজেডির তেজস্বী যাদব এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার হেমন্ত সোরেন।

আরও পড়ুনঃ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মনিটরিং, নাকি রাজ্য নেতৃত্বের গাফিলতি? প্রশ্নে জেরবার গেরুয়া শিবির

নির্বাচনের আগে সংযুক্ত মোর্চার অংশ হতে চলেছে আরজেডি। একথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর ঘোষণার পরেও মমতার ওপর ভরসা রেখেছিলেন তেজস্বী। বাংলায় মমতাকে সমর্থন করবেন বলে স্পষ্ট বার্তা ছিল লালু পুত্রের। অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বেশ কয়েকটি আসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচার করেছে হেমন্ত সোরেন। মানুষের মধ্যে ভরসা জোগান তৃণমূলকে সমর্থন করছেন তিনি।

নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতেই দেখা গেল স্ট্যালিন, মমতা এবং পিনারাই জুটির কাছে হার মানতে হল বিজেপিকে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন অখিলেশ যাদব। সেইসঙ্গে ২৪ এর নির্বাচনে মমতাকে সামনে রেখে লড়াইয়ের কথা জানিয়েছে তাঁরা। এছাড়াও মমতার জয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে এনডিএর এক সময়ের অন্যতম শরীক আকালি দল এবং টিআরএসের চন্দ্রশেখর রাও । সূত্রের খবর, বিজেপি বিরোধী জোটের বিষয়ে খোঁজ নিতে শুরু করেছেন তাঁরাও। অন্যদিকে মমতার সাফল্যে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শিবসেনার উদ্ধভ ঠাকরে এবং এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার।

২৪ এর নির্বাচনের আগে জোট ফ্রন্টে সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর উপস্থিতি স্বাভাবিক। কারণ, মমতার জয়ের পর তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন আনন্দ শর্মা, অশোক গেহলোট এবং কপিল সিব্বালরা। ফোন করে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং। এই মুহুর্তে কংগ্রেসের অন্দরে জটিলতা তৈরি হয়েছে ব্যাপকভাবে। একের পর এক রাজ্যে ক্ষমতা হারাতে শুরু করেছে কংগ্রেস। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনে নতুন মুখ হিসাবে মমতাকেই চাইছেন অন্যান্য দলের নেতারা।

সম্পর্কিত পোস্ট