করোনায় শুধু স্মার্টকার্ডেই চলাচল কলকাতা মেট্রোয়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে কলকাতা মেট্রো রেলের পরিষেবা। শনিবার সন্ধ্যায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নির্দেশিকা জারি করে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। আর সেই নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তৎপরতা শুরু হয়ে গিয়েছে কলকাতা মেট্রো কর্তৃপক্ষের মধ্যে।
রবিবার সকাল থেকেই স্টেশনে স্টেশনে শুরু হয়ে গিয়েছে যাত্রীদের নিরাপত্তার সুবিধার্থে নানা ব্যবস্থা চালুর ট্রায়াল পর্ব। উত্তর থেকে দক্ষিণ সব স্টেশনেই চলেছে এই কাজ। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে প্রত্যেক স্টেশনে বসানো হয়েছে স্যানিটাইজেশন যন্ত্র।
নির্দিষ্ট সময় অন্তর স্টেশন জীবাণু মুক্ত করা হবে তা দিয়ে। জীবাণু মুক্ত করার জন্য আনা হয়েছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামও। এখনও পর্যন্ত কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ এটা জানায়নি যে ঠিক কবে থেকে পরিষেবা চালু হবে তবে অনুমান তা ৭ বা ৮ তারিখ থেকেই চালু হয়ে যাবে।
অন্যদিকে, জানা গিয়েছে, টোকেন ব্যবস্থা নয়, আপাতত স্মার্ট কার্ডে যাত্রীরা মেট্রোয় যাতায়াত করতে পারবেন। এ প্রসঙ্গে কলকাতা মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “এখন আমরা টেকেন ব্যবস্থা বন্ধ রাখছি। কেবলমাত্র স্মার্ট কার্ড ব্যবহারকারী যাত্রীদের মেট্রো যাতায়াতের সুবিধা দেওয়া হবে।”
উল্লেখ্য, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে। কিন্তু, আনলক-৪পর্বে মেট্রো রেলওয়ে চলার ছাড়পত্র দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
মেট্রো চলাচলের ছাড়পত্র পেল এখনই তা একেবারে আগের মত উন্মুক্ত করতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের ব্যাখ্যায়, এখনই আগের মত যাত্রীদের মেট্রো পরিষেবা দিতে গেলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। তাই টোকেন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কারণ, টোকেনের জন্য লম্বা লাইন ও ভিড় হতে পারে মেট্রো স্টেশনগুলিতে। এখনই তেমন ভিড় চাইছে না মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আপাতত স্মার্ট কার্ড ব্যবহারকারীদের মেট্রো উঠতে দেওয়া হবে। স্মার্ট কার্ড ডাউনলোডের জন্য একটি অ্যাপের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেছেন, “গুগল প্লে স্টোর থেকে কলকাতা মেট্রোর একটি অ্যাপ ডাউনলোড করতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সেখানে গিয়ে স্মার্টকার্ড ডাউনলোড কিংবা রিচার্জ করতে পারবেন। করোনা কালে লাইনে দাঁড়িয়ে টোকেন পাওয়ার জন্য আম জনতার মধ্যে যুদ্ধ এড়োতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
এখন কত সংখ্যক মেট্রো চলবে, তা এখনও পর্যন্ত স্পষ্ট করেনি কলকাতা মেট্রো রেলওয়ে। সামাজিক দূরত্বের সঙ্গে আরও কি কি বিধি যাত্রীদের মেনে মেট্রো যাত্রা করতে হবে তাও জানানো হয়নি।
ভগবান নয়, প্রবঞ্চকের মা,নির্মলাকে আক্রমণ অমিতের
মনে করা হচ্ছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের আবহে দ্রুতই এ বিষয়ে গাইডলাইন জারি করবে কলকাতা মেট্রো। তারপরেই মহানগরীর মেট্রো পথচলা শুরু করবে নতুন করে।
কলকাতার লাইফলাইন মেট্রোরেল। নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ রুটে যে ভিড় হয় স্বাভাবিক সময়ে এবার আনলক পর্বেস এটাই সামাল দেওয়া সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে চলেছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের কাছে।
তবে কীভাবে পরিষেবা দেওয়া যাবে তা নিয়ে পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু হলেও মেট্রো রেলের কর্মী থেকে আধিকারিক সবাই প্রায় একমত যে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব। সেখানে কতটা সামাজিক দূরত্ব মানা যাবে সেটা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে।
এখন নোয়াপাড়া থেকে কবি সুভাষ রুটে মেট্রোর ২৫টি রেক চলাচল করে। এখন পরিষেবা চালু হলেও যে আগের মত ঘনঘন ট্রেন মিলবে না সেটা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।
তবুও এক একটি রেকে থাকবে ৮টি করে কোচ। প্রতিটি কোচে থাকবে ৪টি করে দরজা। অর্থাৎ পুরো একটা ট্রেনে থাকছে মোট ৩২টি দরজা।
সেক্ষেত্রে প্রতি দরজায় একজন করে রেল নিরাপত্তা রক্ষী রাখলে একটি রেকে প্রয়োজন হবে ৩২ জন আরপিএফ জওয়ানের। ২৫টি রেকের ক্ষেত্রে সেই হিসাব দাঁড়ায় ৮০০জন। তাও এরা সারাক্ষন ডিউটি দেবে না।
এদেরও বিকল্প কাউকে না কাউকে মজুত রাখতে হবে। অর্থাৎ প্রতি দরজায় আরপিএফ দিয়ে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে খুব কম করে দেড় হাজার আরপিএফ জওয়ান লাগবে।
স্বাভাবিক ভাবেই এত আরপিএফ জওয়ানকে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পোস্টিং দিতে চাইছে না রেল। তাই স্যানিটাইজার, মাস্কের ওপরেই ভরসা রেখে চালাতে চাইছে কলকাতা মেট্রো।