একই মঞ্চে কুণাল ঘোষের সঙ্গে লক্ষণ শেঠ, রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শহীদ ক্ষুদিরাম বসুর জন্মদিন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার হলদিয়ায় জোড়া অরাজনৈতিক কর্মসূচী। একদিকে ‘আমরা দাদার অনুগামী’দের মিছিল। অন্যদিকে ‘ক্ষুদিরাম স্মৃতিরক্ষা কমিটি’ –এর তরফে মিছিল ডাকা হয়। যার উদ্যোক্তা এলাকার তৃণমূল নেতৃত্ব। এদিনের তৃণমূলের অরাজনৈতিক কর্মসূচীর একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস নেতা লক্ষ্মণ শেঠ এবং তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে জল্পনা।
এই মুহুর্তে মেদিনীপুর সহ সারা রাজ্যে আলোচনার হটকেক নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম সদস্যের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে বিভিন্ন মহলে চলছে আলোচনা। এরই মধ্যে ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম ভুমি আন্দোলন যার জন্য শুরু হয়েছিল, প্রাক্তন সিপি(আই)এম সাংসদের সঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে দেখা গেল একই মঞ্চে।
এদিন লক্ষণ শেঠের ভুয়সী প্রশংসা করলেন কুণাল। নদনীগ্রামের ঘটনায় আলিমুদ্দিন লক্ষণ শেঠকে অযথা জড়িয়েছিল বলে দাবী করেন তিনি। নন্দীগ্রামে এই ঘটনা ঘটুক চাইতেন না লক্ষণ শেঠ। এতেই বৃহস্পতিবার শুভেন্দু কড়চার মাঝেই শুরু হয়েছে নতুন জল্পনা । ফ্ল্যাশব্যাকে উঠে আসছে বেশ কিছু ছবি।
আরও পড়ুনঃ শুভেন্দুকে নিয়ে আর আলোচনা নয় দলে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে ওকেইঃ স্পষ্ট বার্তা তৃণমূলের
২০০৭ সালে নন্দীগ্রামের ভূমি আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারা দেশজুড়ে তোলপাড় হয়। নয়াচরে কেমিক্যাল হাব গঠনের জন্য কেন্দ্র সরকার অনুমোদন দেয়। সেইসময় এইচডিএর চেয়রাম্যান ছিলেন লক্ষণ শেঠ। যখন আন্দোলন ক্রমাগত বাড়তে শুরু করে তখন সেই নোটিশ ছিঁড়ে ফেলা হয়। কিন্তু ততক্ষণে জল অনেক দুর গড়িয়ে যায়। কেমিক্যাল হাব তৈরি হলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে। এই দাবীতে দিনের পর দিন আন্দোলন চালিয়ে যান বুদ্ধিজীবীরা। মেদিনীপুরের সর্বত্র আন্দোলন শুরু হয়।
আলিমুদ্দিন এবং লক্ষণ শেঠের মধ্যে দুরত্ব তৈরি হয়। সেই আন্দোলনের কারণে একাধিক অভিযোগ ওঠায় দল থেকে বহিষ্কার হন লক্ষণ শেঠ। পরে বিজেপিতে যোগদান করে ঘুরে আসেন কংগ্রেসে। ২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার গড়ার পিছনে খলনায়ক হিসাবে মনে করা হতো লক্ষণ শেঠকে। পাল্টা লক্ষণ শেঠকে ‘খুনি’ বলে একাধিকবার কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু কি এমন হল, যেখানে লক্ষণ শেঠের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করতে হল তৃণমূলকে?
রাজনৈতিক মহলের মতে, গত কয়েকদিন ধরে শুভেন্দু নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে যে জলঘোলা চলছে সেটারই অবসান ঘটাতে চাইছে তৃণমূল। সূত্রের খবর, বুধবার রাতে শুভেন্দুকে নিয়ে আলোচনা বন্ধ করতে সৌগত রায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই মেদিনীপুরে বিকল্প মুখ খুঁজতেই লক্ষণ শেঠের সঙ্গে মঞ্চ ভাগ করছে তৃণমূল। হলদি নদীর পাড়ে রাজনীতির নতুন মেঘ দেখছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। শুভেন্দুকে ভয় পেয়েই তৃণমূল পরম শত্রুকে কাছে টানছে? শুরু হয়েছে জোর জল্পনা।
নন্দীগ্রাম আন্দোলনের পর অনেকটা সময় বয়ে গিয়েছে। শুভেন্দু নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হওয়াতে তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি ক্রমশ আলগা হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে লক্ষণ শেঠের সঙ্গে একই মঞ্চে কুণাল ঘোষের উপস্থিতি এবং তাঁর মুখে লক্ষণ শেঠের সুনাম ভালোভাবে নেবে না সাধারণ মানুষ। এমনটাই মত রাজনৈতিক মহলের।