অ-বিজেপি জোটে ‘পাশে আছি’, মমতাকে বিমান বার্তায় TMC- CPIM সরগরম

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: যে মমতার বিরুদ্ধে আরএসএস সখ্যতার অভিযোগ তুলে গলা ফাটান বাম নেতারা, তাদেরই ‘চেয়ারম্যান’ বিমান বসুর বার্তা ‘দেশের স্বার্থে পাশে আছি’ বলার পর থেকে রাজ্য থেকে দিল্লি সরগরম। যদিও বামপন্থী নেতাদের দেওয়া তথ্যটি খাঁটি।

পশ্চিমবঙ্গে স্বাধীনতার পর থেকে হিন্দুত্ববাদী সংগঠনটি তৃণমূল কংগ্রেস জমানায় সর্বাধিক শাখা বিস্তার করেছে। সেই সুবাদে এ রাজ্যে গত লোকসভা ও বিধানসভার ভোটে চমকপ্রদ সাফল্য সংঘ পরিবারের রাজনৈতিক শাখা বিজেপির। এখন তারাই বিরোধী দল।

সংঘ পরিবারের চোখে পশ্চিমবঙ্গে কমিউনিস্ট আধিপত্য খতম করার রাজনৈতিক লড়াইয়ে মমতা হলেন ‘দেবী দুর্গা’। রাজনৈতিক আলোচনায় উঠে এসেছে, তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী যতটা না বিজেপি বিরোধী তার চেয়ে বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামে। আগামী লোকসভা ভোট সামনে রেখে তিনি দেশজোড়া অ-বিজেপি জোটের ডাক দিয়েছেন। কিন্তু আরএসএসের বিরুদ্ধে তেমন কিছু বলছেন না। আর মমতার ডাকা বিজেপি বিরোধী জোটের পাশে আছি বার্তা দিয়েছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু।

পূর্ব মেদিনীপুরের দলীয় নেতা নির্মল জানার স্মরণসভা অনুষ্ঠানে বিমান বসু সাংবাদিকদের বলেন, বিজেপি বিরোধী সবার সঙ্গে জোট করতে প্রস্তুত।

রাজ্যে বিজেপিকে হাত ধরে এনেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিপিআইএম ও অন্যান্য বামদলগুলি বারবার এই কথা বলে। বাম জমানায় লোকসভা, বিধানসভা, পুর নির্বাচনে টিএমসি ও বিজেপির জোট করা নিয়েও মমতার কটাক্ষ করেন বাম নেতারা।

সর্বশেষ বিধানসভা ভোটে টিএমসি থেকে জলের ধারার মতো নেতা কর্মীদের বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে বামেরা ‘বিজেমূল’ শব্দে কটাক্ষ করেছিল। ভোটে আরএসএস ক্যারিশ্মায় প্রবল ধর্মীয় মেরুকরণের চোটে ঐতিহাসিক শূন্য ফল পেয়েছে বামফ্রন্ট।

ফের সূচী বদল! মঙ্গলের বিকেলেই দিল্লিতে বৈঠকে মোদী-মমতা

ভোট বিশ্লেষণের হিসেবে বাম নেতারা মনে করছেন সংঘ পরিবার ও মমতার সম্পর্কের রসায়ণ মূলত বঙ্গে বামপন্থীদের সর্বনাশ করেছে। সেই মমতা যখন সর্বভারতীয় বিজেপি বিরোধী জোটের ডাক দেন তখন তাতে বিমান বসুর পাশে থাকার বার্তা আলোড়ন তৈরি করছে। যদিও রাজ্য বিজেপি নেতারা মনে করছেন, যারা ভোটের আসনে শূন্য তাদের নিয়ে আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক। প্রসঙ্গত, বাম জমানার সাড়ে তিন দশকে বিজেপি এ রাজ্যে প্রায় শূন্য ছিল।

অ বিজেপি জোট কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ফের আলোচনার কেন্দ্রে। বিশেষ করে আসন্ন উত্তর প্রদেশ ও পাঞ্জাবের বিধানসভা ভোট যখন সামনে তখন কংগ্রেস বার্তা দিচ্ছে। প্রবল মোদী বিরোধিতা করে পশ্চিমবঙ্গে টানা তিনবার সরকার গড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই অ-বিজেপি শক্তির অন্যতম মুখ।

অন্যদিকে আলোচনায় উঠে আসছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বর্ষীয়ান সিপিআইএম নেতা পি বিজয়ন। তাঁর নেতৃত্বে কেরলে পরপর দুবার সরকার গড়েছে বাম শিবির। তাৎপর্যপূর্ণ এলডিএফ শাসিত কেরল বিধানসভায় বিজেপি শূন্য।

কেন্দ্রীয় বাম মহলেই প্রশ্ন, বঙ্গ বামেদের চেয়ারম্যান কোন যুক্তিতে সংঘের ‘দেবী দুর্গা’ মমতার পাশে থেকে বিজেপি বিরোধিতা করতে চান। কারণ, তত্ত্বগতভাবে সংঘ মনে করে তাদের প্রধান বিরোধী শক্তি কমিউনিস্ট নীতি। কেরলে কমিউনিস্টরাই সংঘকে শূন্য করেছে ভোটের আসনে। দেশে ক্ষয়িষ্ণু বাম শক্তির ঐতিহাসিক জয়ের নেতা বিজয়ন কেন নয় জোট নেতা? এ প্রশ্ন তাড়া করছে বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র, মহম্মদ সেলিম, মীনাক্ষী মুখার্জি সহ প্রবীন, নবীন বঙ্গ বাম নেতা নেত্রীদের।

সম্পর্কিত পোস্ট