মমতা তোমার দৃঢ়তা আমায় অপার শক্তি জোগাচ্ছে : অমর্ত্য সেন
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিজেপির চক্রান্তের প্রতিবাদ করে পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানালেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অর্মত্য সেন।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রীকে এক চিঠি লিখেছেন তিনি। বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কে পাশে দাঁড়ানোয় তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে লিখেছেন, ‘আপনার সমর্থনে ভরসা পেলাম’।
তিনি লেখেন, আপনার শক্তিশালী কন্ঠ, যা ঘটছে তা নিয়ে আপনার উপলব্ধি, আমার কাছে শক্তি উৎসস্বরূপ। এই ভাষাতেই ‘বোন এবং বন্ধু’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠির উত্তর দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন।
ঘটনাচক্রে সোমবার অমর্ত্য সেনের বাড়ির কাছাকাছি বোলপুরের গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার বোলপুরে রাজনৈতিক কর্মসূচিও রয়েছে তাঁর।
মমতার চিঠির জবাবে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ লেখেন, ‘চিঠিতে আপনার সমর্থনের কথা জানতে পেরে আমি খুব খুশি। এটা শুধু আমাকে স্পর্শ করেনি, আমাকে আশ্বস্ত করেছে। আপনার ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও আক্রান্ত মানুষের জন্য আপনি সময় বের করেছেন। আপনার শক্তিশালী কণ্ঠ, যা ঘটছে তা নিয়ে আপনার উপলব্ধি আমার কাছে শক্তির উৎসস্বরূপ’।
বিশ্বভারতীর জমি বিতর্কে তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় মুখ্যমন্ত্রীর পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসার পাশাপাশি তাঁকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন ওই অর্থনীতিবিদ।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/jayaraj-bhattacharya-a-playwright-left-for-delhi-to-join-the-peasant-movement/
সম্প্রতি শান্তিনিকেতনে ‘প্রতীচী’র জমি ঘিরে বিতর্ক তৈরি শুরু হয়েছে। তার পরই লিঠি লিখে ওই অর্থনীতিবিদের পাশে থাকার বার্তা দেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, জমি বিতর্কের কথা জানতে পেরে তিনি ‘বিস্মিত এবং আহত’।
মমতার বার্তা, ‘বিশ্বভারতীর কিছু নব্য হানাদার সম্প্রতি আপনার পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে’।
সেই সঙ্গে বলেন, ‘এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠতার গোঁড়ামির বিরুদ্ধে আপনার লড়াইয়ে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে’। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে লেখা চিঠিতে তাঁকে ‘সম্মাননীয় অমর্ত্যদা’ বলে সম্বোধন করেছেন মমতা। চিঠির শেষে প্রণামও জানিয়েছেন।
লিখেছেন, ‘অনুগ্রহ করে এ দেশের আধিপত্যবাদ এবং অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাকে আপনার বোন এবং বন্ধু হিসেবে গণ্য করুন’। এ বার মুখ্যমন্ত্রীর সেই চিঠিরই উত্তর দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী অর্মত্য সেনকে একটি চিঠি দেন সেখানে তাঁর বাড়ি নিয়ে বিশ্বভারতীর যে সিদ্ধান্ত তাঁর বিরুদ্ধে তিনি বার্তা দেন। এই সময় পাশে দাঁড়াবার বার্তাও দেন। এরপর রবিবার বাংলার বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ করেন।
তারপরেই সোমবার এই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে এই ধন্যবাদজ্ঞাপন করে মেল করেন এই নোবেলজয়ী। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বভারতীর জেলা বীরভূমেই দু’দিনের সফরে গিয়েছেন। সেখানে আজ এক পদযাত্রায় অংশ নেবেন তিনি। সেখানে এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর কাছ থেকে কৈফিয়ত চাওয়া হবে বলেই জানান তিনি।
এরপর সোমবার প্রশাসনিক বৈঠকের আগে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বেশ কিছু আশ্রমিক শান্তিনিকেতন-শ্রীনিকেতনের রাস্তায় পাঁচিল তোলা ও রাস্তা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে অভিযোগ করেন।
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই ফাইলে স্বাক্ষর করে ওই রাস্তা ফের রাজ্য পূর্ত দফতর হাতে নিচ্ছে। যাতে ফের এলাকার মানুষের ইচ্ছেকে সম্মান দিয়ে কাজ করা যায়। এই নিয়ে রাজ্যের পূর্ত সচিব নবীন প্রকাশকে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ করার নির্দেশও দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘটনাচক্রে সোমবারই অমর্ত্য সেনের বাড়ির একেবারে কাছে বোলপুরে গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক সভা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন ওই চিঠির প্রসঙ্গ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্থাপিত করেন।
বলেন, বহিরাগতরা কিছুই জানে না বিশ্বভারতী সম্পর্কে। অমর্ত্য সেন বাংলার গর্ব। টার্গেট করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় টার্গেট আমি নিজে। শুধু অমর্ত্য দা নয়, আরও অনেকে আছেন।