বাজারদর আগুন, সরকার কী করছে? প্রশ্ন আমজনতার

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: করোনা পরিস্থিতেতে শাকসবজি থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস পত্রের দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বগতি। শাকসবজির দাম ক্রমশ আকাশ ছোঁয়া হওয়ায় মধ্যবিত্তের মাথায় হাত পড়েছে। বাজার আগুন হওয়ায় প্রভাব পড়েছে গৃহস্থের রান্না ঘরে। মাছ মাংস ডিম থেকে সমস্থ কিছু কেনা দায় হয়ে পড়েছে আম জনতার।

খোলা বাজারে কাঁচা লংকা ১০০ টাকা দরে বিকোচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে কাঁচা লংকা আরোও মহার্ঘ হবে বলে আশঙ্কা বিক্রেতাদের। উচ্ছে, পটল, কুমড়োর তো কথাই নেই। সর্ষের তেল, রিফাইন তেলের দাম এখন আকাশ ছোয়া। সর্ষের তেল আর রিফাইন তেল লিটার প্রতি দাম উঠেছে ১৮০ এবং ১৬০ টাকা উঠেছে। সরকারি হিসেবে গত দু মাসে রান্নার তেলের দাম কেজি প্রতি ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আর মটন, চিকেন তো এখন ক্রেতাদের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অন্যদিকে ডিমের দামও পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলেছে। শহর এবং শহরতলীর খোলা বাজারে মটন ৮০০ টাকা আর চিকেন ২২০ টাকা ছাড়িয়ে ডাবল সেঞ্চুরি অতিক্রম করেছে।

করোনা প্রতিরোধের জন্য প্রোটিন যুক্ত খাবার হিসেবে মানুষ ডিমের উপর ভরসা করে ছিলো। কিন্তু সেই ডিম বাজারেও আগুন লেগেছে। এখন একটা ৭ টাকা দরে বিকোচ্ছে। এক ট্রে ডিমের দাম ১৮০ টাকা থেকে ২১০ টাকায় ঘোরাফেরা করছে।

ডিম বিক্রেতাদের বক্তব্য, করোনার জেরে ডিমের চাহিদা গত কয়েক মাসে দ্বিগুন হয়েছে। রাজ্যে যে পরিমান ডিম উৎপাদন হয়, তা দিয়ে পূরণ করা যাচ্ছেনা। পণ্যবাহী ট্রাক অন্দ্রপ্রদেশ থেকে আসছে না। আর তার জেরে ডিমের মূল্য বৃদ্ধি বলে ডিম ব্যাবসায়ীরা মনে করছেন। আর মুগ,মুসুর ডালের তো কোনো কথাই নেই। এসবের মূল্যবৃদ্ধির একই যুক্তি দিয়েছেন ব্যাবসায়ীরা।

লকডাউনের জেরে বহু মানুষের কাজ হারিয়েছেন । আর তার মধ্যে বাজারদর আগুন। এই পরিস্থিতে কি করে দিন চলবে, তা নিয়ে চিন্তিত সকলেই।  মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষ বাজার হাটের দৈনন্দিন বাজেট কাটছাট করে পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করতে বাধ্য হয়েছেন।।

মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে কোলে মার্কেটের পাইকারি ব্যাবসায়ীদের বক্তব্য, লকডাউনের জেরে ভিন রাজ্য থেকে ট্রাকে কোনোও পণ্য সামগ্রী আসছে না। ট্রেন চলাচলও পুরোপুরি বন্ধ। প্রবল বর্ষণের জেরে লংকার মতো অন্য সমস্ত শাকসবজি নষ্ট হয়ে গেছে। আর যার ফলে চাষিরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত।

লেকমার্কেটের পাইকারি বিক্রেতাদের কথায়, ডিজেলের ক্রমশ মহাঘ্য হওয়ায় প্রভাব পড়েছে শাক সবজি থেকে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীতে। পাইকারি বিক্রেতাদের বক্তব্য ,এক লরি শাকসবজি নদিয়া থেকে কোলে মার্কেট আনতে চার হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতে শাকসবজি থেকে অনন্য সমস্ত পণ্য সামগ্রীর দাম কি করে কম হওয়ায় সম্ভব বলে প্রশ্ন তুলেছেন তারা ।

সাধারণ মানুষের প্রশ্ন ,মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকার টাস্ক ফোর্স আছে। কিন্তু টাস্কফোর্স কি করছে? বর্তমান পরিস্থিতিতে এদের ভুমিকাই বা কি? ওয়েস্ট বেঙ্গল ভেন্ডার্স আসোসিয়েসনের সভাপতি এবং রাজ্য সরকারের মার্কেট টাস্ক ফোর্সের সদস্য কমল দে অবশ্য এই অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির দায় ফোঁড়েদের উপর চাপিয়েছেন।

তার কথায়, শাক সব্জি থেকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী খোলাবাজারে আসামাত্র ফোঁড়েদের দাপাদাপি বাড়ছে। এক শ্রেণীর ফোঁড়ে সস্তায় চাষিদের কাছ থেকে সমস্ত শাকসবজি কিনছে। আর তারা খুচরো বিক্রেতাদের কাছে মোটা টাকায় বিক্রি করছে। আর যার ফলে চাষীরা দাম পাচ্ছেন না।

রাজ্য কৃষি দপ্তরের অবশ বক্তব্য পরিস্থিতি সামাল দেবার চেষ্টা করছেন। এই মূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে সরকার কি পদক্ষেপ নেয়, সেটাই এখন দেখার।

সম্পর্কিত পোস্ট