রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ক্রশ ভোটিং হতে পারে, আশঙ্কা বঙ্গ বিজেপিতে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ মেয়াদ ফুরোতে চলেছে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের। পুনরায় তাঁর রাইসিনা হিলের বাড়িতে ফেরার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলতে গেলে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি আয়োজিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই নতুন মুখ খুঁজতে শুরু করেছে বিজেপি। হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যার থেকে কম ভোট থাকলেও নিজেদের প্রার্থীকে জেতানোর বিষয়ে নিশ্চিত গেরুয়া শিবির। কিন্তু এই নির্বাচনে ক্রশ ভোটিংয়ের আশঙ্কায় ভুগছে মুরলীধর সেন স্ট্রিটের নেতারা।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন লোকসভা ও রাজ্যসভার সাংসদরা ছাড়াও প্রতিটি রাজ্যের বিধানসভার বিধায়করা ভোট দেন। সেই হিসেবে গতবার রামনাথ কোবিন্দকে সহজেই রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত করতে পেরেছিল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ।

কিন্তু গত পাঁচ বছরে অকালি দল, পিডিপি, শিবসেনা সহ বেশ কিছু দলের এনডিএ ত্যাগ ও তামিলনাড়ুতে শরিক এআইএডিএমকের পরাজয় এবং উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, উত্তরাখণ্ডে সরকার ধরে রাখতে পারলেও বিধায়ক সংখ্যা কমে যাওয়ায় এবার নিজেদের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য প্রয়োজনীয় ভোট বিজেপির হাতে নেই।

তবে ওড়িশার শাসকদল বিজেডি এবং অন্ধ্রপ্রদেশের শাসক দল ওয়াইএস‌আর কংগ্রেস ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপি মনোনীত প্রার্থীকে সমর্থনের ইঙ্গিত দিয়েছে। আরও কিছু ছোট ছোট দলের সমর্থন জুটিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা। ফলে নিজেদের পছন্দের কাউকে রাষ্ট্রপতি করার ক্ষেত্রে বিজেপি এবারেও সফল হবে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান।

বারবার ডেকে পাঠাচ্ছে সিবিআই, ভাবমূর্তির প্রশ্নে অনুব্রতকে নিয়ে কড়া হতে পারে তৃণমূল

কিন্তু এই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মুখ পোড়ার আশঙ্কায় ভুগছে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ৭৭ টি আসনে জিতলেও নীশিথ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার সাংসদ পদ ধরে রাখায় তখনই বিধায়ক সংখ্যা কমে হয়েছিল ৭৫। উপনির্বাচনে তারা দিনহাটা ও শান্তিপুর হারিয়েছে তৃণমূলের কাছে।

তাছাড়া মুকুল রায়, তন্ময় ঘোষ, বিশ্বজিৎ দাস, কৃষ্ণকুমার কল্যাণীরা তৃণমূলে ফিরে যাওয়ায় বিধায়ক সংখ্যা কমে ৭০ হয়েছিল। এবার অর্জুন সিংয়ে ঘর ওয়াপসি পর তাঁর ছেলে তথা ভাটপাড়ার বিধায়ক পবন সিংও তৃণমূলের দিকে চলে গিয়েছেন। ফলে এই মুহূর্তে রাজ্যে বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ৬৯। আর‌ও ১০-১৫ জন বিজেপি বিধায়ক তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছে বলে খবর।

ঘটনা হচ্ছে তৃণমূলে ফিরে যাওয়া বিধায়করা বিধানসভায় খাতায়-কলমে এখনও বিজেপির বিধায়কই আছেন। তাঁরা কেউ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফাও দেননি। কিন্তু রাষ্ট্রপতি নির্বাচন দলীয় হুইপ চলে না। ফলে মুকুল রায়রা বিরোধী শিবিরের প্রার্থীকেই ভোট দেবে বলে বিজেপির অনুমান।

এরাজ্যের বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে যদি ব্যাপক ক্রশ ভোটিং হয় (৬৯ জন বিধায়কের কম ভোট যদি পান এনডিএ প্রার্থী) তবে দলে অবিশ্বাসের বাতাবরণে চূড়ান্ত আকার ধারণ করবে। এতে পরিষদীয় দলের ভাঙন আরও বাড়বে। বাকি বিধায়কদের একটা বড় অংশ তখন একসঙ্গে দলত্যাগ করতে পারেন। এর প্রভাব ২৪ এর লোকসভা ভোটেও পড়তে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট