এক বছরে অনাহারে তিন লাখের বেশি শিশুমৃত্যু, জনস্বার্থ মামলায় কড়া অবস্থান সুপ্রিম কোর্টের

এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুধা এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিউনিটি কিচেন গড়ে তোলার দাবিতে জনস্বার্থ মামলা হয়। ওই মামলায় কড়া অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

দ্য কোয়ারি ওয়েব ডেস্ক : দেশে প্রতিবছর না খেতে পেয়ে মারা যায় তিন লক্ষের বেশি শিশু। প্রতিদিন না খেতে পেয়ে মারা যায় বহু শিশু।

এমন পরিস্থিতিতে ক্ষুধা এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিউনিটি কিচেন গড়ে তোলার দাবিতে জনস্বার্থ মামলা হয়। ওই মামলায় কড়া অবস্থান নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

এর আগে গত ১৮ অক্টোবর শীর্ষ আদালত কমিউনিটি কিচেন স্থাপনের পক্ষে মত দিয়েছিল। আদালত বলেছিল, ক্ষুধার সমস্যা মোকাবিলায় দেশে এমন ব্যবস্থার প্রয়োজন। ক্ষুধা এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কমিউনিটি কিচেন প্রকল্প গড়ে তোলার বিষয়ে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতামতও চেয়েছিল আদালত।

আরও পড়ুনঃ ‘সংরক্ষণ মৌলিক অধিকার নয়’,সুপ্রিম সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে উত্তাল সংসদ

কিন্তু বহু রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এতে সাড়া দেয়নি। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনভি রমনার বেঞ্চ সেইসব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এ বিষয়ে হলফনামা দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, এক লক্ষ টাকা জরিমানা সহ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হলফনামা জমা দিতে হবে।

যেসব রাজ্য ২৪ ঘণ্টা পর হলফনামা পেশ করবে, তাদের জরিমানা হবে পাঁচ লক্ষ টাকা। জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই হলফনামা পেশ করেছে পাঞ্জাব, নাগাল্যান্ড, কর্নাটক, উত্তরাখন্ড এবং ঝাড়খন্ড।

অন্যদিকে, দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আন্দামান ও নিকোবর এবং জন্মু ও কাশ্মীর হলফনামা জমা দিয়েছে।

গণবণ্টন প্রকল্পের বাইরে একটি জাতীয় খাদ্য প্রকল্পের দাবিতে এই জনস্বার্থ মামলা করেন সমাজকর্মী অনান ধাওয়ান, ঈশান ধাওয়ান এবং কুঞ্জনা সিং। তাঁরা ওই মামলায় দাবি করেন, পাঁচ বছরের নিচে বহু শিশু প্রতিদিন অনাহারে ও অপুষ্টিতে মারা যাচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে খাদ্যের অধিকার সহ নানান মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। অনাহারে মৃত্যুর ঘটনা হ্রাসে ন্যাশনাল লিগাল সার্ভিসেস অথরিটিকেও যুক্ত করার দাবি জানান তাঁরা।

সমাজকর্মীরা তাঁদের আবেদনে উল্লেখ করেন, ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড এবং দিল্লি কমিউনিটি কিচেন প্রকল্পে ভর্তুকিতে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য সরবরাহ করছে।

আবেদনকারীদের আইনজীবী অসীমা মন্ডল এবং ফাজিল আহমেদ আইয়ুবি আদালতে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক অনাহার এবং অপুষ্টির বিরুদ্ধে নানান প্রকল্পে কাজ করলেও তা অস্বচ্ছ এবং সীমাবদ্ধ।

উল্লেখ্য, এদেশে অনাহারে মৃত্যুর কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। অনাহারে মৃত্যুর পর একমাত্র ময়না তদন্ত করেই অনাহারে মৃত্যুর প্রমাণ সম্ভব। যদিও বিভিন্ন বিশ্ব সংস্থার রিপোর্ট দাবি করেছে, ভারতে বছরে তিন লাখের বেশি শিশু অনাহারে মারা যায়। এর মধ্যে পাঁচ বছর বয়সের শিশুর সংখ্যাই বেশি।

বিশ্বের বহু দেশ কমিউনিটি কিচেন প্রকল্পের মাধ্যমে অনাহার ও অপুষ্টির বিরুদ্ধে জোরালো ব্যবস্থা নিয়েছে। এর ফলে অনাহারের মৃত্যুর ঘটনা কমানো সম্ভব হয়েছে।

এদেশেও সরকার এবং কর্পোরেট সোশাল রেসপন্সিবিলিটি্র যৌথ উদ্যোগে এমন প্রকল্প হতে পারে বলে দাবি করেন আবেদনকারীরা।

সম্পর্কিত পোস্ট