প্রশাসনিক চাপ থেকে স্থানীয়দের অসহযোগীতা- কতদিন আন্দোলন চালাতে সক্ষম হবেন কৃষকরা?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শুক্রবার দুপুরে আচমকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দিল্লির সিংঘু বর্ডার। দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলনরত কৃষকদের ওপর পাথর ছোঁড়া হয় বলে অভিযোগ। ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে তাঁবু। এই ঘটনায় স্থানীয় মানুষজনের দিকেই অভিযোগের আঙুল তোলা হয়েছে।
প্রতিবাদী কৃষকরা জানাচ্ছেন প্রায় ২০০ র বেশি মানুষ আন্দোলন তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়ে আন্দোলনস্থলে তান্ডব চালিয়েছে। এতে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীও।
পরিস্থিতি সামাল দিতে দ্রুত রণক্ষেত্রের ময়দানে নামে পুলিশ। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে ফাটাতে হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। নামানো হয় র্যাফ।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাজ দলের নেতা যোগেন্দ্র যাদব। এদিন সকালে গাজীপুরে আন্দোলনরত কৃষকদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন দিল্লির উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিশোদিয়া।
তিনি বলেন, কৃষকদের জল ও অস্থায়ী শৌচালয়ের ব্যবস্থাপনায় কোনরকম ত্রুটি যাতে না থাকে তা খতিয়ে দেখেই তিনি এসেছেন। তিকরি সীমানায় আসেন আম আদমি পার্টির নেতা রাঘব চাড্ডা, স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দর জৈন।
সৌজন্যতার বিরল নজির, মমতার ছবি হাতে বিধানসভার বাইরে আবেগপ্রবণ রাজীব
তাঁরা বলেন, অভিযোগস্থলে পুলিশ জলের ট্যাঙ্কার আসতে দিচ্ছে না। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে উঁচু মহল থেকে এই নির্দেশ রয়েছে। অথচ রাজ্য সরকারের তরফে এমন কোন নির্দেশিকা জারি করা হয়নি।
সরাসরি বিজেপিকে আক্রমণ করে আপ নেতা রাঘব চাড্ডা বলেন, বিজেপি কৃষকদের সঙ্গে অন্যায় আচরণ করছে। তবে আপ সরকার খাবার ও জলের অভাবে অন্নদাতাদের মৃত্যুবরণ করতে দেবেনা ।
গোটা এলাকায় রয়েছে কড়া নিরাপত্তা। আপাতভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হলেও চারদিকে তাণ্ডবের ছাপ স্পষ্ট। ক্রমশ কেন্দ্রীয় সরকারের চাপ এবং স্থানীয় মানুষদের তীব্র অসহযোগিতায় কৃষকদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে উঠছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
প্রসঙ্গত কৃষি আইনের বিরুদ্ধে গত দু মাসের বেশি সময় ধরে অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন কৃষকদের ট্রাক্টর মিছিলকে কেন্দ্র করে। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানী । বিক্ষুব্ধ কৃষকদের একটি অংশ ঢুকে পড়ে লালকেল্লার ভেতর। তান্ডব চলে লালকেল্লার ভিতরে।
এর পরেই কৃষক আন্দোলন রুখতে আরও সক্রিয় হয়ে উঠতে দেখা যায় প্রশাসনকে। উত্তরপ্রদেশ সরকার কঠোর নির্দেশ দেয়, বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে আন্দোলন তুলে রাস্তা খালি করতে হবে। প্রবল চাপের মুখে নতি স্বীকার করে সরতে থাকেন কৃষক সংগঠনগুলি।
এরই মাঝে ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের মুখপাত্র রাকেশ টিকায়াত নতুন করে কৃষকদের উজ্জীবিত করেন। বৃহস্পতিবার রাতে সাংবাদিক বৈঠকে কৃষকদের কাছে অশ্রু জলে আবেদন করেন আন্দোলন থেকে সরে না যাওয়ার জন্য। তারপর থেকেই মোড় ঘুরে যায় আন্দোলনের।
ভাল আছেন মহারাজ, দু-একদিনের মধ্যেই ছেড়ে দেওয়া হবে তাঁকে
ফের নতুন করে জমায়েত হতে শুরু করেন কৃষকরা। কৃষকদের নিজেদের মধ্যেই বৈঠক হওয়ার কথা তারপরেই পরবর্তী পদক্ষেপ কি হবে তা স্থির করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এই কঠিন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে কৃষকরা আদৌ তাদের আন্দোলন আর কতদিন চালিয়ে যেতে পারবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে।