জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর অপসারণের দাবিতে প্রকাশ্যে আদি বনাম নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব, উত্তাল বর্ধমান

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পূর্ব বর্ধমানের বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে। বর্তমান জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীকে অপসারণের দাবিতে আজ বিজেপি অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়।

আজ পার্টি অফিসে বিজেপি কর্মীরা এলে তাদের ওপর বর্ধমান জেলার বিজেপি সভাপতি সন্দীপ নন্দীর উপর বিক্ষুব্ধ কর্মীরা পার্টি অফিসের উপর থেকে ঢিল ছুড়তে শুরু করে। এরপরই পাল্টা আক্রমণ শুরু হয় বিজেপির পার্টি অফিসের উপর।

ভেঙে দেওয়া হয় বিজেপি পার্টি অফিসের সমস্ত জানলা।  এরপর পুলিশ এসে উত্তপ্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সেই সুযোগে বর্তমান বিজেপি জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর অনুগামীরা পরপর দুটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি।

বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ গোটা ঘটনাটিতে আদি বনাম নব্য বিজেপির দ্বন্দ্ব উড়িয়ে দিয়েছেন। এই ঘটনায় জড়িতদের বহিরাগত বলে দাবি করেছেন তিনি।

তাঁর কথায় বর্তমানে বিজেপিতে বিভিন্ন পার্টি থেকে প্রচুর মানুষ এসে যোগ দিচ্ছেন একুশের নির্বাচনে বিজেপি ক্ষমতায় আসবে আর সেটাই ভালো চোখে মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। তারাই বাইরে থেকে লোকজন এনে আজ এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে।

তবে তিনি আরো জানান গোটা ঘটনাটির তদন্ত করা হবে খতিয়ে দেখা হবে। এই ঘটনার সঙ্গে আদৌ বিজেপি কর্মীদের কোন যোগসূত্র রয়েছে কিনা।

আচমকা আগুন পুনের সিরাম ইন্সটিটিউটে

২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বর্ধমান থেকে জয়ী হয় বিজেপি। সাংসদ হন সুরিন্দর সিং অহলুওয়ালিয়া। যদিও বিজেপি কর্মীদের একাংশ আগেই অভিযোগ তুলেছিলেন সাংসদকে লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে আর দেখা যায়নি। বর্ধমানবাসীদের কোনো আপদে বিপদে সাংসদরে টিকিও খুঁজে পাওয়া যায় না।  এই মর্মে সাংসদের নামে দিন কয়েক আগেই নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিজেপির বর্ধমান জেলা সভাপতি সন্দীপ নন্দীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি শাসক দলের সঙ্গে তার যোগসুত্র রয়েছে। অভিযোগ সন্দ্বীপ নন্দী কাটমানি সহ একাধিক ইস্যুতে অভিযুক্ত হয়েছেন তাই সন্দীপ মন্দিরসহ জেলার বেশ কয়েকটি পদে নেতাকর্মীদের অপসারণের দাবি তুলে এদিন বিক্ষোভ দেখানো হয় বিজেপি পার্টি অফিসে।

চলতি মাসেই বর্ধমানে এসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। তিনি সেদিন শক্তি প্রদর্শনের র‍্যালি করেছিলেন বর্ধমান শহরের প্রাণকেন্দ্রে। সেদিনের সেই রেশ কাটতে না কাটতেই বিজেপির পার্টি অফিসে এই হামলা নিঃসন্দেহে বিজেপির মুখ পুড়িয়েছে বলাই যায়।

বিজেপিতে যোগ দিয়ে একের পর এক মঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষরা যখন দাবি করছেন তারা ২০০ টিরও বেশি সিট পেয়ে ক্ষমতায় আসবেন তখন সেখানেই প্রকট হয়ে উঠছে আদি বনাম নব্য বিজেপির লড়াই।

রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূল ছেড়ে এই মুহূর্তে যারা বিভিন্ন দল থেকে বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন এবং তাদেরকে সামনের সারিতে রাখা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির পুরনো কর্মীরা। তাদের মতে এতদিন যাদের বিরুদ্ধে এই লড়াই ছিল, আজ তাদের সঙ্গে কাজ করা কোনভাবেই সম্ভব নয়। তাই বিক্ষুদ্ধ কর্মীদের উত্তেজনা মাঝেমাঝেই প্রকাশ পাচ্ছে ।

আজ বর্ধমানের পাশাপাশি আসানসোলে বাবুল সুপ্রিয় ও অরবিন্দ মেননের সামনেই বিক্ষোভ দেখান বিজেপির পুরোনো কর্মীরা। কেশপুরে শুভেন্দু অধিকারীর সভার পরেও কার্যত একই ছবি দেখা গিয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট