সরকার রক্ষায় নরমপন্থা অবলম্বন গেহলোটের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ গত একমাস নিজেকে সরিয়ে রাখার পর সোমবার দিল্লিতে হাইকম্যান্ডের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজস্থানের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী শচীন পাইলট। তারপর থেকেই খানিকটা সুর পাল্টে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোট৷
দলের যে সমস্ত বিধায়করা এতদিন ক্ষুব্ধ ছিলেন তাঁদেরকে আলিঙ্গন করে স্বাগত জানাবেন। নরমপন্থা অবলম্বন করে এমনটাই জানালেন বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা।
তিনি আরও বলেন, কি কারণে বিধায়করা চলে গিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে কি কথা হয়েছিল, সেটাও জানার চেষ্টা করবেন তিনি৷ জয়সলমীরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে গেহলোট বলেন, যদি আমার ব্যবহারে কোনও বিধায়ক বিরক্ত হয়ে থাকেন তবে সেটা আমার দায়িত্ব তাঁকে বোঝানো। আমি আগেও এ কাজ করেছি। এখনও আমি এ কাজ দায়িত্ব সহকারে পালন করব।
গত একমাস রাজস্থান রাজনীতির আকাশে যে ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছিল মঙ্গলবার অশোক গেহলোটের মন্তব্যের পর কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেল। স্পষ্ট এটাই বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়করা দলে ফিরলে লাভ আদতে গেহলোটের হবে।
সংখ্যাতত্ত্বের পাশাপাশি বারবার যে বিজেপিকে তিনি কাঠগড়ায় তুলেছেন তার বিরুদ্ধেও কড়া জবাব দেওয়া হবে।
যদিও গত একমাস ধরে সরকারকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য শচীন পাইলট এবং তাঁর অনুগামীদের তীব্র আক্রমণ করতে বিন্দুমাত্র পিছপা হননি গেহলোট।
শচীন পাইলটকে জনসমক্ষে “নাকারা”, ” নিকম্মা” বলেছেন তিনি। এদিন সেই প্রসঙ্গ এড়িয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলোট।
বিজেপির দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, বিধায়করা সকলেই আমার সঙ্গে রয়েছেন। বিজেপি বারবার টাকার লোভ দেখিয়ে সরকার ভাঙার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে। আমি আমার বিধায়কদের বলতে চাই আমি তাঁদের কঠিন সময়েও অভিভাবক হিসেবে তাঁদের পাশে দাঁড়াবো।
সঙ্কটজনক প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্য়ায়, বাড়ছে উদ্বেগ
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার লোভে নোংরা রাজনীতি খেলছে এই সরকার। এর আগে ভারতের ইতিহাসে এতটা নির্লজ্জ সরকার আমরা আগে দেখিনি। এবার তাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়ার সময় এসে গিয়েছে।
এর মধ্যে খানিকটা নরম সুরে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে শচীন পাইলটকেও। সাংবাদিকদের তরফে গেহলোটের আক্রমণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অশোকজি আমার চাইতে বয়সে অনেক বড়। আমি তাকে শ্রদ্ধা করি। আমি দলগত কিছু বিষয়ে কিছু প্রশ্ন তুলতেই পারি। কিন্তু আমি গত ২০ বছরে সেই লক্ষণরেখা অতিক্রম করে কোনও ভাষা ব্যবহার করিনি। আমি ভবিষ্যতেও এরকম কিছু করবো না। এবং এবিষয়ে আমার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার কিছু রয়েছে বলে আমি মনে করিনা।
১৮ জন বিধায়ক নিয়ে সরকার গঠনের জল্পনায় জল ঢেলে শচীন পাইলট বলেন, আমি কোনও সরকার গড়তে চাইনা। আমি কোনও সরকার ভাঙতেও চাই না। আমরা জনগণের হয়ে কাজ করতে চাই।
সোমবার দলের কংগ্রেস হাই কম্যান্ডের সঙ্গে বৈঠকের পর রণনীতিতে খানিকটা বদল এনেছে রাজস্থান বিজেপি। ১৪ অগাস্ট বিধানসভায় যে আস্থা ভোট হওয়ার কথা ছিল, তার আগে বিজেপির ডাকা বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছিল।
কিন্তু শচীনের মুভমেন্টে ফের ওয়েট এন্ড ওয়াচ গেমে নির্ভর হতে হচ্ছে গেরুয়া শিবিরকে। ফের বৃহস্পতিবার দলের তরফে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
বিরোধী দলনেতা গুলাবচাঁদ কাতারিয়া জানিয়েছেন এদিনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভসুন্ধরা রাজে।
রাজস্থান বিজেপির ৭২ জন বিধায়কের মধ্যে ৪৫ জন বসুন্ধরা অনুগামী। গোটা ঘটনায় তার চুপ ছিলেন তিনি। তাই বিধানসভা অধিবেশনের ঠিক একদিন আগে ডাকা বৈঠকে তার উপস্থিতি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।