গোপালকৃষ্ণকে প্রার্থী করতে চাওয়ায় কারণ কী পুরনো সম্পর্ক ?
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সর্বসম্মত প্রার্থী হবে, নাকি সরকার ও বিরোধী পক্ষ নিজেদের মতো করে লড়াই করবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে বেশিরভাগ বিরোধীদল একজোট হয়ে প্রার্থী দিতে চাইছে। এক্ষেত্রে তাদের প্রধান বাজি ছিলেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ শরদ পাওয়ার। কিন্তু ‘মারাঠা স্ট্রংম্যান’ শেষ পর্যন্ত বেঁকে বসায় বিরোধীদের প্রার্থী হিসেবে গোপালকৃষ্ণ গান্ধির নাম উঠে এসেছে।
সূত্রের খবর বুধবার দিল্লিতে বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে বৈঠকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই প্রথম গোপালকৃষ্ণের নাম প্রস্তাব করেন। এছাড়াও জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আব্দুল্লাহর নামও উঠে এসেছে। তবে গোপালকৃষ্ণ গান্ধির দিকেই তুলনায় পাল্লা ভারী।
হঠাৎ পূর্ণ সময়ের কোনও রাজনীতিবিদকে বাদ দিয়ে গোপালকৃষ্ণ গান্ধির মতো একজনের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন প্রস্তাব করলেন তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক ছিল মহাত্মা গান্ধির এই পৌত্রের।
রাষ্ট্রপতি ভোট নিয়ে মমতার প্রাসঙ্গিকতা স্পষ্ট, তবে ফলাফলের উপর সবটা নির্ভর করছে
টাটাদের ন্যানো গাড়ি কারখানা নিয়ে বিতর্কের সময় তিনি এগিয়ে এসে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখোমুখি আলোচনায় বসিয়েছিলেন। আজও সিপিএমের অনেক নেতাই মনে করেন সেদিন গোপালকৃষ্ণ ওই উদ্যোগ নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য!
এমনকি নন্দীগ্রাম কাণ্ডের পর গোপালকৃষ্ণ গান্ধি বলেছিলেন, ‘হাড়হিম করা ঘটনা’। যা মোটেও বামেরা ভালোভাবে নেয়নি। তিনি সরাসরি রাজনীতির মানুষ না হলেও পুরানো কথা মনে রেখে নেতাদের পাশাপাশি নিচুতলার সিপিএম কর্মীসমর্থকরা আজও গোপালকৃষ্ণ গান্ধির তীব্র বিরোধী। বাম শিবিরের একাংশ মনে করছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গোপালকৃষ্ণ গান্ধিকে প্রার্থী করে তৃণমূল নেত্রী আসলে সিপিএমের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিতে চাইছেন।
ঘটনা হল বাংলার রাজ্যপাল পদের মেয়াদ শেষের পরও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে গোপালকৃষ্ণ গান্ধির ভালো যোগাযোগ ছিল। এর আগের বার উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন তাঁকে বিরোধীদের প্রার্থী করার বিষয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগ ছিল সবচেয়ে বেশি। বামেদের আপত্তি থাকলেও মমতা গোপালকৃষ্ণ গান্ধিকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করতে চান।
তাঁর নামে কংগ্রেসেরও বিশেষ আপত্তি নেই। তবে শেষ পর্যন্ত বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিরোধীদের প্রার্থী হলে ভোট না দেওয়ার পথে হাঁটতে পারে বামেরা। কারণ সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব এই বিষয়ে কিছু না বললেও রাজ্যের নিচুতলার সিপিএম কর্মী-সমর্থকরা ইতিমধ্যেই গোপালকৃষ্ণকে নিয়ে ক্ষোভ উগরোতে শুরু হয়ে দিয়েছেন।