উৎসবের আলোয় রঙিন শহরে বেমানান ওরা ‘অন্য আলোর’ প্রতীক্ষায়
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ “ফুলে ফুলে, ডোলে ডোলে…”, পুজোর এই শহরে কত তরুণ তার প্রিয়ার আঁচল ধরে পথ হাঁটবে। তৃষ্ণার্ত হৃদয় একটু হাতের ছোঁয়ায় শিহরিত হয়ে উঠবে। আবার মফস্বলের দামাল-দস্যি ছেলেদের ভেঁপুর আওয়াজে রাতের নিঃস্তবদ্ধতা খান খান হয়ে যাবে। সব ছাপিয়ে নবমীর মধ্য রাতের ক্লান্ত মণ্ডপে হয়তো মন খারাপ নিয়ে বেজে উঠবেন গুলাম আলি- “চুপকে চুপকে রাত দিন আঁসু বাহানা ইয়াদ হ্যায়…”
দুর্গাপুজো মানেই শহর কলকাতায় নানান আলোর খেলা। পেটকাঠি চাঁদিয়ালকে যেমন কাটে, কোনও আলো তেমনই হয়তো ম্যাডক্স স্কোয়ারের আড্ডায় কলেজ জীবনের ছেড়ে আসা বন্ধুকে যুক্তিতে খানখান করে মাটি ধরায়। কোনও আলোয় আবার শুধুই পয়সার খেলা, বৈভবের চুঁয়ে ছুঁয়ে পড়া অহমিকার ছটা।
কিন্তু এই শহরই যে আজও বস্তিতে বস্তিতে ছয়লাপ। তাদের মস্তির ঝাঁজই অন্যরকম। হাইওয়ে ধরে রাতের অন্ধকারে তীব্র গতিতে ছুটে আসা ট্রাকের হেড লাইটের আলোর মতো চোখ ঝলসে দেওয়া! ওরাই এই আলোর মেলার প্রাণভোমরা।
টেট সঙ্গে ১১,০০০ শূন্যপদের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘শাসনের’ মাঝেই নিয়োগ
কিন্তু ওই গান্ধি মূর্তির পাদদেশের ছেলে-মেয়েগুলো যেন চাঁদের কলঙ্ক, বা ঠান্ডা গ্রহ নেপচুন! দুর্গাপুজোয় মায়াবী কলকাতার ঝকমকি আলো যেন সব ওরাই শুষে নিচ্ছে। আরে ওরা তো এই শহরের মেতে ওঠা পুজোর অংশ নয়। আজ নয়, আগেও ছিল না কোনদিন।
যোগ্য বঞ্চিতের বদলে এরা যখন রমেন, তপন বা সীমা, রিম্পা, সামিমা ছিল তখন এরাও এই আলোর এক একটা সোর্স ছিল। কিন্তু এই শহরের প্রাণকেন্দ্রে থেকেও ওই ছেলেমেয়েগুলো যেন কত দূরে আছে। এই রোশনাই ওদের চোখ ধাঁধিয়ে দিতে পারেনি। তাই পুলিশ, নেতারা বলা সত্ত্বেও ওরা বসে। ঠায় বসে। আদালতও ওদের এই বসে থাকার অধিকার মেনে নিয়েছে। তাই পুজো পাঁচদিন প্যান্ডেল হপিংয়ের পাশাপাশি বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের ধর্নাও চলবে।
ওরা যে অন্য আলোর সন্ধানে। শুধু সেই আলোর উৎসস্থল দেখতে পাওয়ার অপেক্ষায়!