লকডাউনের মাহাত্ম্যঃ একে অপরকে বাড়িয়ে দিন সহযোগীতার হাত
শুভজিৎ চক্রবর্তী
লকডাউনের বাজারে যা ঘুমোচ্ছি আর খাচ্ছি তাতে মনে হয় ওজন আরও বাড়বে বৈ কমবে না। অফিস ডিউটির মত করে দিনরাত ঘুম দিচ্ছি। গুলি খেলার একটা জটিল নিয়ম ছিল। খাট হলেই নো নড়নচড়ন ঠকঠকাসে জীবন শেষ হয়ে যেত। লম্ফ জেলে খাট চলছে। আমার অবস্থা সেই খাট দেওয়া গুলির মত। খাটের ওপর সারা দিন নো নড়ন চড়ন ঠকঠকাস। এদিকে ভুঁড়ি বাবাজি বেড়েই চলেছে।
আমি যখন হয়েছিলাম তখন নাকি আমার ওজন ছিল দেড় কেজি। আমি নিজের ওজন জেনেছি আমার মেজ দিদিমার কাছ থেকে। উনি সবাইকে ডাকতেন সদ্যজাত শিশুর ওজন হিসাবে। যেমন কেউ দেড় কেজি, কেউ আবার দু কেজি। যার যেমন ওজন, তার তেমন নাম।
গত ২ বছরে আমার ওজন প্রায় ৫ কেজির বেশী বেড়েছে। সময় হাতে রয়েছে বলে রোজ বাড়িতে নিত্যনতুন খাবের এক্সপেরিমেন্ট চলছে। নোলা সামলাতে না পেরে গোগ্রাসে সব খেয়েই চলেছি। কিন্তু আগামী দিন নিয়ে চিন্তায় রয়েছে গোটা বিশ্ব।
নিজের ভিটেতে ফিরতে গিয়ে প্রাণ হারাতে বসেছেন একাধিক পরিযায়ী শ্রমিক। একটানা না খেতে পেয়ে অবস্থা একেবারে কাহিল। যারা আটকে পড়েছেন তাদের মধ্যে অনেকে ফিরবেন কিভাবে? পরের দিন থেকে বাঁচবেন কিভাবে? সেই প্রশ্ন নিয়ে জেরবার হয়ে পড়ছেন।
আরও পড়ুনঃ #coronavirus করোনার প্রতিষেধক আবিষ্কার করেছে চিন, দাবি করছে চিনা সংবাদমাধ্যম
সদ্য এক ভিডিওতে দেখলাম কিছু মানুষ বহুদুর হাঁটার পর খাবার পেয়েছেন। খাবার দেখে তারা কেঁদে ফেলেছেন। এমত কঠিন অবস্থায় যারা সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন তাদের কুর্নিশ জানাই।
এমনিতে পান থেকে চুন খসলে সরকারের সমালোচনা করতে ছাড়ি না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর তৎপরতা দেখে সত্যিই কুর্নিশ জানাতে ইচ্ছে করছে। মরচে ধরা পেট গুলো যাতে না খেতে পেয়ে মারা যায় তার জন্য সমস্ত জেলাশাসকদের কড়া বার্তা দিচ্ছেন।
ধন্যবাদ জানাবো তাদেরকেও যারা ঘরে বসে সহযোগীতা করছেন। ওজন বাড়ে বাড়ুক তাতে কোনও ক্ষতি নেই। রোজ সকালে বাড়ির উঠোনে বা ছাদে উঠে শরীরচর্চা করুন, ওজন কমলেও কমতে পারে। চেষ্টার খামতি আপনিও রাখবেন না। বাকি রইল লকডাউনের হিসাব। নাতিপুতিদের বলবেন লকডাউনের মাহাত্ম্য কি। হাত ধুয়ে খাবার খান আবার খেয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন। লাগিয়ে নিন স্যানিটাইজার। একে অপরের সহযোগীতায় অনেক প্রাণ বাঁচতে পারে।