বিজেপির ইশতেহারকে জুমলা আখ্যা দিল তৃণমূল কংগ্রেস

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিজেপির নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন লাগু করার বিষয়ে বলা হয়েছে। আর এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় দ্বর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিলেন, বিজেপির কথায় ভুলবেনা বাংলার মানুষ। কারণ এনআরসি বা নাগরিকত্ব দিতে গিয়ে অসমে মানুষের কি অবস্থা হয়েছে তা সকলেই দেখেছে। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ কখনোই বিজেপিকে সমর্থন করবে না।

তৃণমূলের এই প্রবীণ সাংসদ এদিন বলেন, বাংলার জন্য ইশতেহার কিন্তু তা প্রকাশ করলেন একজন গুজরাটের লোক। আর তার পাশে ছিলেন একজন মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা।

এদিন তৃণমূল কটাক্ষ করেছে, এই ঘটনার অর্থ,বিজেপি বাংলার ক্ষমতায় আসতে চায় কিন্তু বাংলায় তাদের ইশতেহার প্রকাশ করার মত কোনও মুখ নেই। আর সে কারণেই টুরিস্ট গ্যাংদের এনে ইশতেহার প্রকাশ করতে হচ্ছে। সৌগত রায় এও বলেন, দলের বিষয়গুলি পরিচালনার জন্য এখনও বিজেপির কাছে কোন সক্ষম নেতা নেই।

তৃণমূল নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, বিজেপির এই ইশতেহার আসলে কিছু নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। এই প্রতিশ্রুতি যে তারা রক্ষা করবেন তার কোন অর্থ নেই। কারণ অতীতে ২০১৪ সালে দেখা গিয়েছিল বছরে দু’কোটি চাকরি আর প্রত্যেক নাগরিকের ব্যাংক একাউন্টে 15 লক্ষ টাকা করে পাঠাবেন বলেছিলেন তারা।

প্রথম দফার নির্বাচনে রাজ্যের ১০ শতাংশ প্রার্থী কোটিপতি

কিন্তু নির্বাচনে জেতার পর সেই প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছেন তারা। এবারও যে তা হবে না তার নিশ্চয়তা কে দেবে? সৌগত রায় বলেন, বিজেপি আসলে তৃণমূল কংগ্রেসকে অনুকরণ ও অনুসরণ করছে। বিজেপির ইশতেহার ভালো করে লক্ষ্য করলে এও দেখা যাবে বেশ কিছু জিনিস তৃণমূলের অনুসরণ করে করা হয়েছে।

দমদমের সাংসদ বলেন, বিজেপির ইশতেহারের কি বিশ্বাস যোগ্যতা আছে। কারণ অতীতেও দেখা গিয়েছে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করেনি এই দলটি।

এ দিন ইশতেহারে প্রকাশ করতে গিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব বলেছে, রাজ্যে তাদের সরকার গঠিত হলে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন দ্বারা রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাস করবে- যার উপর ভিত্তি করেই মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এদিন বিজেপির এই দাবিকে ও ভিত্তিহীন বলেছে তৃণমূল কংগ্রেস।

সৌগত রায় বলেন,এটি একটি কেন্দ্রীয় আইন এর জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমতি প্রয়োজন কি! তিনি আরও বলেন, অসমে নাগরিকত্ব আইন চালু করেছে বিজেপি। সেখানে ১৭ লক্ষ হিন্দুকে তারা নাগরিকত্ব দেয়ার নামে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়েছেন।

এখানেও কি তাই করতে চায় বিজেপি! নাগরিকত্ব দিতে গিয়ে অসমে মানুষের কি অবস্থা হয়েছে তা সকলেই দেখেছে। এর থেকে শিক্ষা নিয়ে মানুষ কখনোই বিজেপিকে সমর্থন করবে না।সবচেয়ে বড় কথা রাজ্যে বিজেপি সরকার গঠিত হবেই না। কাজেই তারা নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন রাজ্য মন্ত্রিসভায় পাস করার সুযোগ পাবেন না।

এ দিন বাংলাকে বঞ্চিত করার অভিযোগও করেছেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, ইশতেহারের মাধ্যমে বাংলার হয়ে দাবি পেশ করছেন বিজেপি নেতারা। অথচ দিনের পর দিন দেখা গিয়েছে তারা বাংলাকে বঞ্চিত করছে। ভয়াবহ আম্ফান ঘূর্ণিঝড়ের পর রাজ্যকে মাত্র ১০০০ কোটি টাকা দিয়েছে ।

West Bengal Election: প্রার্থী তালিকায় নেই মতুয়াদের নাম, ক্ষোভে ফুঁসছে ঠাকুরবাড়ি

তাঁর কথায় ,আর কোনও সাহায্য করেনি কেন্দ্র। জিএসটির ন্যায্য পাওনা এখনো বাকি। করোনাকালে রাজ্যকে মাত্র দেড়শ কোটি টাকা দিয়েছে কেন্দ্র। গত বছর প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকার মতো অর্থ বাংলা এবং বাঙালিকে বিজেপি সরকার দেয়নি।

সর্বোপরি সৌগত রায়ের প্রশ্ন, সোনার বাংলা তৈরি করার কথা বলছে বিজেপি। এই সোনার বাংলা কি বহিরাগত নেতাদের হাতে তৈরি হবে! তার ভাষায় এই ইশতেহার আসলে পরিকল্পিত মিথ্যাচার, বিজেপির জুমলা।

সম্পর্কিত পোস্ট