বিচ্ছেদের সুর বাজছে মারকুইজ স্ট্রিটে, মন ভালো নেই এক টুকরো বাংলাদেশের
সর্নিকা দত্ত
শহর কলকাতার প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেট। তার অনতিদূরে মারকুইজ স্ট্রিট। যেন এক টুকরো বাংলাদেশ। বছরভর এখানে বিদেশীদের আনাগোনা থাকে। যার সিংহভাগই ওপার বাংলার।
আর তাই এই চত্ত্বরে থাকা ধানসিড়ি, কস্তুরী, দাওয়াত রেস্টুরেন্টগুলি বা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলিতে পদ্মাপারের বাঙালির দাপট একচেটিয়া৷ পঞ্চব্যঞ্জন নয়, খাওয়ার পাতেও তাই বাঙালির ষোড়শ -ব্যঞ্জনের বাহুল্য৷
কিন্তু দীর্ঘ লকডাউন বা তার পরবর্তী পর্বে মন খারাপ মারকুইজ স্ট্রিটের।এখানে থাকা অধিকাংশ হোটেলই ফাঁকা। করোনা সংক্রমণের দৌলতে বিদেশীদের আনাগোনা এই মূহূর্তে একদম বন্ধ। আর তাই গোটা চত্ত্বরে অদ্ভুত এক নীরবতা। হতশা বললেও ভুল হবে না।
এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কাটা ফল বিক্রি করে মুক্তার মণ্ডল। আনলক পর্ব শুরু হতেই তিনি তার পসরা নিয়ে বসতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু খদ্দের কই, এতদিন যাঁরা আসতেন তারাই তো আসছেন না। ফলে পাততাড়ি গুটিয়ে তিনিও এখন ভবঘুরে।
লকডাউনের জন্য বাঙালির পাতে পড়তে পারে বড় মাপের ইলিশ
এখানে রয়েছে লাইন করে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র। কোথাও কোথাও তো একইসঙ্গে টিকিট বুকিং ও বাংলাদেশী টাকা ও ডলার থেকে ইন্ডিয়ান রুপীতে লেনদেন হয়। আনলক প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সেগুলিও ধীরে ধীরে খুলতে শুরু করেছে। তবে যাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা তাঁরা না থাকায় এখন অনেকগুলি দোকানেই অঘোষিত লকডাউন।
এই চত্ত্বর থেকেই ছেড়ে যেত শ্যামলী, সোহাগ, গ্রীণলাইন একাধি আর্ন্তজাতিক পরিবহন সংস্থার বাস। প্রত্যেক পরিবহন সংস্থারই একটা ঘুমটি রয়েছে রয়েছে সেখানে। কিন্তু লকডাউন পরবর্তী সময়ে সবই অমিল।
৩৬৫ দিন এখান থাকা ট্যাক্সি ও টানা রিক্সারও দেখা মিলছে না সেভাবে ফলে এই চত্ত্বরকে কেন্দ্র করে চলা আর্ন্তজাতিক অর্থনীতি এখন পুরোপুরিই স্তব্ধ। কবে আবার স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না।
কারণ যে করোনা ভাইরাসের কারণেই এই চেহরা এ এলাকার তা কিন্তু এখনও এরাজ্য থেকে দূর হয়নি। বরং আক্রান্তের সংখ্যা প্রতিদিনই নিয়ম করে বাড়ছে শহরে। একই হাল ওপার বাংলারও।
ফলে বিষাদের সুর গোটা এলাকায়। যে ধাক্কা লকডাউন দেশীয় অর্থনীতিকে দিয়েছে, তা কাটিয়ে ওঠা যায় কিভাবে তা নিয়ে ভাবছে অর্থনীতিবিদরা।
কিন্তু কলকাতা এককোনে পড়ে থাকা এই “মিনি বাংলাদেশ’কে নিয়ে ভাবার সময় তাদের আদৌ আছে কি!