জনপ্রিয়তায় ভাটা ! ভার্চুয়াল সভায় প্রশ্নের ঝড় চাকরী প্রার্থীদের
শুভজিত চক্রবর্তী
তৃণমূলের প্রথম ভার্চুয়াল সভা। তবে যেভাবে প্রস্তুতি শুরু হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত তা কিন্তু জমল না। এদিন বক্তৃতার মাঝে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, অন্যান্যবার জনপ্লাবনে অনেকেই সভা অবধি পৌঁছতে পারেন না। সেক্ষেত্রে ভার্চুয়াল সভার মাধ্যমে এবার ৫০ লক্ষ মানুষের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা পৌঁছে গেছে।
কিন্তু ঘোষণা অনুযায়ী প্রতিফলন দেখা গেল না তৃণমূল কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রাধীন সোশ্যাল মিডিয়া সেলে। ফেসবুকে লাইভ শুরু হওয়ার সময় সর্বোচ্চ ১৬ হাজার দর্শক সংখ্যা ছিল। বক্তৃতার শেষে দর্শক সংখ্যা চলে যায় ১৩ হাজারে।
প্রায় ২৪ ঘন্টা হতে চলল। এখনো পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী লাইভটি শেয়ার হয়েছে ২ হাজার। দর্শক সংখ্যা ৯২০৯৪৭। কমেন্টস ৭৭০০। প্রশ্ন উঠছে এখানেই। তাহলে কী সত্যিই লড়াকু নেত্রী ওরফে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে?
২১ এর আগে এই ২১ জুলাই তৃণমূলের জন্য শুধুমাত্র শহীদ দিবস ছিল না। বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ছিল দলের নতুন রণনীতি বাতলে দেওয়ার দিন।
করোনার জেরে এবারের কর্মসুচীতে ভাটা পড়ে। ধর্মতলার বদলে কালিঘাট থেকেই ভার্চুয়াল র্যালি করেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। কিন্তু ভার্চুয়াল র্যালিতেই প্রশ্নের ছড়াছড়ি। প্রশ্ন প্রাথমিক শিক্ষকদের নিয়োগের তারিখ নিয়ে।
এদিন অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের মাধ্যমে বক্তব্য রাখছিলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। রাখা হয়েছিল বিরাট আয়োজন। সেখানেই আপার প্রাইমারী, প্যারা টিচার ও টেট নিয়ে নিয়োগ ও বেতন সংক্রান্ত একের পর এক কমেন্টস ঝড় তুলে দেয়।
মুখ্যমন্ত্রীর এদিন ভাষণে বলেছেন যেখানে গোটা দেশে বেকারত্ব বাড়ছে বাংলায় বেকারত্ব কমেছে ৪০ শতাংশ। সেই তত্ত্বেই রীতিমত প্রশ্ন তুলে দিলেন শিক্ষিত যুব সমাজের একাংশ। যারা এসএসসি, টেট, আপার প্রাইমারী নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
প্রশ্ন তুলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাও। যেখানে দীর্ঘ ৭ বছর বেকারত্বের শিকার প্রাথমিক শিক্ষক চাকরী প্রার্থীরা, ৩৮ মাস ধরে বেতনহীন জীবিকা সেবকরা, জীবন যন্ত্রনায় যুঝছেন অতিথি অধ্যাপকরা। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারী ক্ষেত্রে চাকরীর আশায় বারবার নিজেদের প্রমাণ করার পরীক্ষা দিয়ে যাচ্ছেন যুব সমাজ সেখানে মুখ্যমন্ত্রী কী করে দাবি করছেন বাংলায় বেকারত্ব কমেছে? তাহলে কী ১০০ দিনের কাজ এবং ক্ষুদ্র শিল্পে কর্মসংস্থানই শেষ কথা?
২১ এর বিধানসভার নির্বাচনে ফ্রি রেশন এবং ফ্রি চিকিৎসা ব্যবস্থার পাশাপাশি অবশ্যই নজর থাকবে শিক্ষকদের নিয়োগ নিয়েও। এমনিতেই গত কয়েক বছর ধরে স্থায়ীকরণ এবং বেতন বৃদ্ধি নিয়ে একাধিকবার অনশনে বসতে দেখা গিয়েছে শিক্ষকদের।
যে ইস্যুকে হাতিয়ার করেই শাসক শিবিরের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধীরাও। ২১ এর নির্বাচনের আগে শিক্ষকরা তাদের উত্তর পান কিনা এখন সেটাই দেখার।