ত্রিপল চুরি আমার লেভেল নয়, শুভেন্দকে পাল্টা অভিষেক
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দলের প্রবীণ, অভিজ্ঞ নেতাদের বাড়ি গিয়ে তাদের আশীর্বাদ নিচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার পার্থ চট্টোপাধ্যায়-সুব্রত বক্সি-সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমবার লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করার পর মঙ্গলবার বিকেলে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা তথা সাংসদ সৌগত রায়ের বাড়ি গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করলেন এই যুবনেতা।
দু’জনের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট কথা হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে একহাত নিলেন অভিষেক।
এদিনই দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন শুভেন্দু। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে সাংবাদিকদের তিনি রাখছি ৩৫৬ ধারা জারির পক্ষে সওয়াল করেন তিনি। এদিন শুভেন্দুর সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন ডায়মন্ডহারবারের সংসদ। তিনি বলেন, কে কি বলেছেন তা আমার জানা নেই। তবে এটুকুই বলতে পারি তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করার আগে বিজেপি নেতৃত্ব নিজের অন্তর্কলহ মেটাক।
আসলে ঘটনার সূত্রপাত সোমবার।তৃমমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেওয়ার পর ওইদিনই অভিষেক শুভেন্দু সম্পর্কে বলেছিলেন, উনি দিল্লির বশ্যতা স্বীকার করে কুত্সা না করে বিরোধী দলনেতার মতো দায়িত্বশীল আচরণ করুন। গঠনমূলক ভূমিকা পালন করুন। এই অনুরোধই করব।
যার জবাবে মঙ্গলবার দিল্লিতে শুভেন্দু বলেন, প্রথমত, তৃণমূল কোনও দলই নয়! ওটা একটা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি। একটা আঞ্চলিক পার্টি। আমি ওই পার্টির কোনও নেতার প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নই। আমার লেভেলের কোনও নেতাকে বলতে বলবেন, তার উত্তর আমি দিয়ে দেব।
সেখানেই না-থেমে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা একধাপ এগিয়ে বলেন, শাসকদলের হয়ে নির্বাচনে জেতা যায়। শাসকদলের হয়ে অনেক বড় বড় কথা বলা যায়। (নিজের বুকে আঙুল ঠেকিয়ে) আমি শুভেন্দু অধিকারী বামফ্রন্টের আমলে ২০০৬ সালের বিধায়ক। আমি শুভেন্দু অধিকারী ২১৩ সিট নিয়ে জিতে-আসা মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়েছি। সরকারি ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে নির্বাচনে জিতেছি এমনটাও নয়। ২০১১ সালের পর যাঁরা সোনার চামচ মুখে নিয়ে ২,০০০ পুলিশ নিয়ে রাস্তা পেরোয়, সরকারি হেলিকপ্টার নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাদের কথার উত্তর শুভেন্দু অধিকারীর মতো স্রোতের বিরুদ্ধে থেকে শাসকদলের বিরুদ্ধে থেকে লক্ষ্ণণ শেঠ, মমতা ব্যানার্জিকে হারানো লোক দেবে না!
দিল্লিতে অভিষেক প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতার ওই কথা বলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অভিষেক শুভেন্দুর আক্রমণের জবাব দিয়েছেন। তিনি বলেন, উনি আজকে বলেছেন উনি আমার লেভেলের না! ওঁর লেভেলটা কী, আমি জানতে চাইছি।
কাজে লাগছে না মার্কিন প্রযুক্তি, বজ্রাঘাতে মৃত্যুমিছিল অব্যাহত রাজ্যে
তিনমাস আগে যখন প্রতিটা সভায় আমার বাপবাপান্ত করে কথা বলতেন, তখন ওঁর লেভেলটা কি উপরে উঠে গিয়েছিল? নাকি এখন লেভেলটা নেমে গিয়েছে? ওঁর লেভেলটা কী? অভিষেকের আরও কটাক্ষ, এই যে তিনি এত বড় বড় কথা বলছেন! ওঁর বাড়ির লোক তো ত্রিপল চুরিতে অভিযুক্ত! নিশ্চিতভাবেই উনি ঠিকই বলেছেন, ওটা ওঁর লেভেল নয়। তাই ওটা আমারও লেভেল নয়।
উল্লেখ্য, শুভেন্দু এবং অভিষেকের মধ্যে এই দ্বৈরথ চরমে উঠেছে ভোটের সময় থেকেই। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরেও সেই বাকযুদ্ধ কমার লক্ষণ তো নেই-ই বরং আরও বেড়ছে। শুভেন্দু অধিকারী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পরস্পরের প্রতি যুযুধান। ফলে পরস্পর বিরোধিতা আরও চরম আকৃতি নিচ্ছে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। এখন দেখার আগামীতে এই দ্বন্দ্ব শেষ পর্যন্ত কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়ায়।