ঘূর্ণিঝড় আমফানে তার সবুজ মোড়ক হারিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড় আমফান শুধু শহর কলকাতাকে বিপর্যস্ত করে সাধারণ মানুষের জন জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলেনি। প্রায় অর্ধেক শহরকে দুমড়ে-মুচড়ে রেখে দিয়ে গেছে। এ বাইরে নেই শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ গুলিও।

রাজ্য সরকারের নির্দেশে শহরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করতে বলা হয়েছে। আর তাতেই চোখ কপালে ওঠার দায় মানুষের। যেহেতু শহর কলকাতার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য পাকা বাড়ি রয়েছে কাজেই সেখানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেকটাই কম।

তবে এই সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেতরে থাকা সবুজের প্রায় সিংহভাগই নষ্ট করে দিয়ে গেছে আমফান। ফলে এমতাবস্থায় এ কথা বলা নিশ্চয়ই অতিশয়োক্তি হবে না যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন সবুজের অভাবে ভুগছে।

ঘূর্ণিঝড় শহর কলকাতায় প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার গাছ উপড়ে ফেলে দিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে কলকাতা পুরসভার মুখ্য প্রশাসক ফিরহাদ হাকিমের কাছে এই সবুজ ফিরিয়ে দেওয়ায় প্রধান চ্যালেঞ্জ।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে খবর পাওয়া গিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ে মূলত সেখানেই ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। এই ঝড়ে গোটা ক্যাম্পাসের প্রায় তিনশোর বেশি গাছ পড়ে গিয়েছে সেখানে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার স্নেহামঞ্জু বসু জানিয়েছেন, ঝড়ের পরেই সবুজ পুনরুদ্ধার নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে গাছের সংখ্যার জরিপ করা হয়েছিল।

আমফান নিয়ে ট্যুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ রাজ্যপালের

সে সময় যে বিশেষজ্ঞেরা এই কাজ করেছিলেন, তারা এখন কাজ করছেন। মে গাছগুলো ঝড়ে পড়ে গিয়েছে সেগুলি আবার বসানো যায় কিনা তার চেষ্টা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছে। একইসঙ্গে যে সমস্ত গাছ নতুন করে বসানো সম্ভব নয় তাদেরকে সরিয়ে ফেলার জন্যও আলাদা একটা টিম তৈরি করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

শুধু যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নয়, কলকাতা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়েও এই ভয়ানক ঘূর্ণিঝড় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটিয়েছে। বাংলাদেশ যুদ্ধের স্মৃতিতে তৈরি স্মারক যেটি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরির সামনে রাখা ছিল এই ঝড়ে গাছ পড়ে গিয়ে তার একাংশের ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রায় এক ডজন গাছ পড়ে গিয়েছে। এরমধ্যে ক্যাম্পাসে থাকা বহু পুরনো বটগাছও রয়েছে।

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার বলেন, ঝড়ের পর কলকাতা পুরসভা এবং পিডব্লিউডির সাহায্য নিয়ে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া সমস্ত গাছি মোটামুটি সরিয়ে ফেলেছি। তবে সবুজকে বাঁচাতে কিভাবে এর বিকল্প গাছ বসানো হবে তা নিয়ে এখন বিশ্ববিদ্যালয় পরিকল্পনা চলছে।

অন্যদিকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ঝড়ে তাদের বিটি রোড ক্যাম্পাসে বেশ কিছু গাছ পড়েছে। একই সঙ্গে অন্যান্য কিছু ক্ষয়ক্ষতি ও হয়েছে। আজ বুধবার ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বৈঠক ডাকা হয়েছে এই বৈঠকের পরই সামগ্রিকভাবে ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে বলা যাবে।

অন্যদিকে খবর রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বালিগঞ্জ ক্যাম্পাসেও বেশ কিছু গাছ পড়েছে। মোটের উপর সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির একটা পরিসংখ্যান তৈরি করছে। দ্রুত এই পরিসংখ্যান উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। শিক্ষা দপ্তর আবার এই রিপোর্ট নবান্ন জমা করবে বলে জানা গিয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট