গুজরাট মডেল কেন নয় বাংলায় বোঝাল তৃণমূল

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শিল্প ও কর্ম সংস্থানে গুজরাট মডেল চালু করা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বুধবার তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে দলের জাতীয় মুখপাত্র তথা সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় জানিয়ে দিলেন, উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও ক্ষুদ্রশিল্পের পরিসংখ্যানের মানদন্ডে বহুক্ষেত্রে বাংলার থেকে পিছিয়ে রয়েছে গুজরাট। বাংলা কেন সেই গুজরাটকে মডেল করবে। অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলা উন্নয়নের একটা স্বাতন্ত্র ধারা রয়েছে। বিজেপি কি চাইছে তাঁকে নষ্ট করে দিতে?

তিনি বলেন, বাংলায় বলা হচ্ছে গুজরাট মডেল চালু করা হবে। গুজরাট মডেল আসলে কি? সেটা ব্যাখ্যা করলেই বোঝা যাবে এই মডেল চালু হলে আদতে বাংলার লাভ না ক্ষতি।

সুখেন্দু শেখর রায়ের মতে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে রাজ্যে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বরাদ্দ বৃদ্ধি হয়েছে ৬.৩ শতাংশ। তবে গুজরাটে বৃদ্ধি পেয়েছে ৪ শতাংশ। একইসময়ে শিক্ষাক্ষেত্রে ১২.৯ শতাংশ বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে গুজারাটে বেড়েছে ৫.৩ শতাংশ। এমএসএমই বাংলায় রয়েছে ৮৮ লক্ষ সেখানে গুজরাটে আছে মাত্র ৩৩ লক্ষ।

মনরেগায় এখানে ২৮ কোটি কর্মদিবস তৈরি হয়েছে। তবে গুজরাটে সেখানে কর্মদিবস তৈরি মাত্র ৩.৫ কোটি।২০-২১ অর্থবর্ষে কৃষিক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করেছে ৬৬ শতাংশ। গুজরাটে সেখানে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি পেযেছে মাত্র ৪ শতাংশ। সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, এই গুজরাটকে নিশ্চয় বাংলার মানুষ মডেল করতে চাইবেন না। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে গোটা দেশে গুজরাট নজির সৃষ্টি করেছে। সেখানে গোধরার মতো ভয়াবহ দাঙ্গা সংঘোটিত হয়েছে। সেখানে ২০০০ মানুষ গণহত্যায় প্রায় হারায়। দেড় লাখ মানুষ ঘর ছাড়া হন।বাংলার মানুষকেই ঠিক করতে হবে, তারা এই গুজরাট মডেল বাংলায় চায় কিনা।

এছাড়াও তিনি বলেন, নর্মদা বাঁধ নির্মান নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মানুষেরা আন্দোলন করেছেন। সুপ্রীমকোর্ট আন্দোলনকারীদের কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনের আদেশ দেওয়া সত্ত্বেও  আজও প্রায় ৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে রয়েছেন। অনেকে কাজ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে বেশীরভাগ মানুষ আদিবাসী তফশিলী ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়।

নাম না করে বিজেপির উদ্দেশ্যে কড়া হুশিয়ারী দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাকে গুজরাট বানানো অতো সহজ নয়। দাঙ্গা বাঁধানো বিভাজন কিংবা ঘোড়া কেনাবেচা করতে যে সমস্ত বহিরাগত এসেছেন তাদেরকে দৃঢ় হাতে মোকাবিলা করা হবে। উল্লেখ্য, এদিন বিজেপির ‘টার্গেট বাংলা’-রও সমালোচনা করেন এই প্রবীন রাজনীতিক। তিনি বলেন, টার্গেট পাকিস্তান বা টার্গেট চায়নার বদলে কেন বাংলা। বাংলা তো দেশের অবিচ্ছেদ্য আংশ তাকে কেন টার্গেট করতে চাইছেন বিজেপি নেতারা।

সম্পর্কিত পোস্ট