বাম জামানার চাকরি নিয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ বিকাশের, গ্রহণ করবেন মমতা?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ  শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগের তদন্ত ঘিরে বেশ কিছুদিন ধরেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বিষয়টিকে হাতিয়ার করে বিজেপির পক্ষ থেকে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করার চেষ্টা করা হলেও তা খুব একটা সফল হয়নি। এইদিকে এই সংক্রান্ত বেশিরভাগ মামলাকারীর আইনজীবী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন সিপিএমের রাজ্যসভার সাংসদ তথা কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য।

তাঁর দৌলতেই এই বিষয়টি নিয়ে আসরে নামার সুযোগ পেয়েছে বামেরা। এই নিয়ে এতদিন খুব একটা উচ্চবাচ্য করেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি সঠিক সময়ের অপেক্ষায় ছিলেন। বৃহস্পতিবার ধর্মতলার ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে তিনি কড়া বার্তা দেন বিকাশবাবু ও সিপিএমকে।

মুখ্যমন্ত্রী কী বলেছেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারির সুরে বৃহস্পতিবার বলেন, সিপিএম আমলে কীভাবে চিরকুটে লিখে শিক্ষকের চাকরি হত, কলকাতা পুরসভায় কাদের ভুয়ো জন্মসংসাপত্র দেওয়া হয়েছে সেই সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তাঁর কাছে আছে। ঠিক সময়ে সেগুলো বাইরে নিয়ে আসবেন।

পাহাড়ে ধনখড়-হিমন্তের সঙ্গে মমতার বৈঠকেই কী ঠিক হয় উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে থাকবে না তৃণমূল?

সেই সঙ্গে বাম জামানায় সিপিএমের লোকাল ও জোনাল কমিটির নেতাদের স্ত্রীরা কিভাবে সরকারি চাকরি পেয়েছেন সেই বিষয়েও তাঁর কাছে সব তথ্য আছে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা শুনে মনে হয়েছে প্রয়োজনে বাম জামানায় চাকরির অনিয়ম সংক্রান্ত তথ্য তিনি সর্বসমক্ষে তুলে ধরবেন।

কিন্তু এই নিয়ে পাল্টা ফোঁস করে উঠেছেন বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য। এই দুঁদে আইনজীবী মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন। বিকাশবাবুর যে বক্তব্য সিপিএমের পক্ষ থেকে প্রচার করা হচ্ছে সেখানে স্পষ্ট এই রাজ্যসভার সংসদ বলেছেন, “একটা তদন্ত কমিটি হোক। তার চেয়ারপার্সন হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা তথ্য আছে প্রকাশ্যে আনুন, নাহলে পাগলাগারদে যান!”

বিকাশের কথা থেকে পরিষ্কার রাজ্যের প্রধান হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী যেহেতু অভিযোগ তুলেছেন তাই বাম জামানার সিপিএম নেতাদের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের চাকরি এবং তিনি মেয়র থাকাকালীন কলকাতা পুরসভার জন্মসংসাপত্র সংক্রান্ত অনিয়মের তদন্ত চাইছেন।

সিপিএমের পক্ষ থেকেও দলগতভাবে মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগের বিস্তারিত তদন্ত চাওয়া হয়েছে। তাদের বক্তব্য, হয় তদন্ত করে সর্বসমক্ষে এবং আদালতে উপযুক্ত প্রমাণ তুলে ধরুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। না হলে তিনি যে ভুল কথা বলেছেন সেটা তাকে প্রকাশ্যে স্বীকার করুন।

এক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে বামেদের ও বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের চ্যালেঞ্জের সুর থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার, তাঁরা অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে কোনও বেনিয়মই তৃণমূল সরকার বার করতে পারবে না। এক্ষেত্রে বিকাশবাবু এক ধাপ এগিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকেই সেই তদন্ত কমিশনের মাথা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

প্রশ্ন হচ্ছে তৃণমূল সরকার তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের এই চ্যালেঞ্জ কি গ্রহণ করবেন? নাকি এটা আর পাঁচটা রাজনৈতিক তরজা হিসেবেই থেকে যাবে? তবে মুখ্যমন্ত্রীকে পাগলা গারদে যাওয়ার কথা বলাটা কতটা সমীচীন হয়েছে সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

সম্পর্কিত পোস্ট