লকগেট ভেঙে যাওয়ায় ব্যাহত হতে পারে মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কাজ, আশঙ্কায় কাটছে প্রহর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ লকগেট ভেঙে যাওয়ায় দুর্গাপুর ব্যারেজ এখন প্রায় জলশূন্য। আর এর বড়সড় প্রভাব এবার পড়তে চলেছে পুর্ব ভারতের বৃহত্তম তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। ইতিমধ্যেই ওই তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিজস্ব রিজার্ভারে যে জল মজুত রয়েছে তাতে আর আগামী দুদিন উৎপাদন স্বাভাবিক রাখা সম্ভব। তারপরও জল সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে উৎপাদন কমার আশঙ্কা রয়েছে। সেক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিতে পারে রাজ্যের বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে শুরু করে ইসিএল, রেল সহ বিভিন্ন শিল্পে।

মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে দৈনিক ২৩৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এই বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান কাঁচামাল কয়লা ও জল। এই কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন স্বাভাবিক রাখার জন্য দৈনিক দেড় লক্ষ কিউবিক মিটার জলের প্রয়োজন হয়। এই জলের সবটাই আসে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে।

আপৎকালীন পরিস্থিতির জন্য তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিজস্ব দুটি রিজার্ভার রয়েছে। এই রিজার্ভারে প্রায় পনেরো লক্ষ কিউবিক মিটার জল মজুত রাখা হয়। দুর্গাপুর ব্যারেজে লক গেট ভেঙে যাওয়ার পর থেকেই মেজিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

লকগেট ভাঙার জেরেই তীব্র জলসঙ্কটের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাঁকুড়ার ধবনী গ্রামে। কারণ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের তৈরি প্রকল্পে পাইপলাইনের মাধ্যমে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বাঁকুড়া শহর সহ ধবনী গ্রামে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু লকগেট ভেঙ্গে পড়ায় আপাতত জলসরবরাহ বন্ধ। ফলে চরম সমস্যায় ওই গ্রামের মানুষ।

অন্যদিকে, রবিবার রাত থেকে শুরু হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজের ৩১ নম্বর লকগেটের সামনে বালির বস্তা দিয়ে ব্যারিকেড করার কাজ। কিন্তু এখনও জলের যা স্রোত রয়েছে সেখানে বালির বস্তা দিয়ে বাঁধ দিতে অসুবিধা হচ্ছে। দামোদর জলাধারের বেশিরভাগ অংশ খালি হয়ে গেলেও ৩১ নম্বর গেটের কাছাকাছি জলের স্রোত এখনও অব্যাহত।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/soumitras-condition-deteriorated-again-the-artist-forum-called-for-blood-donation/

উল্লেখ্য, দুর্গাপুর ব্যারেজে এই মুহূর্তে মোট ৩৪ টি লকগেট রয়েছে। ২০১৭ সালে দুর্গাপুর ব্যারেজের ১ নম্বর লকগেটটি ভেঙে যায়। ভয়ানক অবস্থা নেয় আশেপাশের এলাকা। ব্যারেজে জল বেরিয়ে গিয়ে আশেপাশের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়ে যায়। তখনও বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। সেই স্মৃতি এখন মুছতে না মুছতেই ফের এই বিপত্তি।

তবে আশার কথা এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে প্রশাসনিক তৎপরতা। জানা গিয়েছে, দামোদর নদের জলের স্তর শনিবারের মতো না থাকলেও রবিবার সকাল পর্যন্ত ভাঙা গেট দিয়ে হু হু করে জল ঢুকছে। জলের স্তর না নামলে কাজই শুরু করা যাবে না।

রবিবার সকালে সেচ দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার জয়ন্ত দাস পরিদর্শন করেন দুর্গাপুর ব্যারেজ। এর পরে তিনি কথা বলেন বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে। তিনি জানান, জলের স্তর না নামা পর্যন্ত ওই ভাঙা লকগেটে মেরামতি করা কোনওভাবেই সম্ভব নয়।

ইতিমধ্যে রবিবার সেচ দফতরের সচিব সহ একঝাঁক উচ্চপদস্থ আধিকারিক দুর্গাপুর ব্যারেজ পরিদর্শন করেন। কিন্তু ওই ভাঙা লকগেট মেরামতির কাজ করে শুরু করা যাবে তা নিয়ে বাড়ছে ধোঁয়াশা। বালির বস্তা ফেলে ৩১ নম্বর লকগেট পর্যন্ত একটি রাস্তা বানানোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে জলের স্তর। ফলে কাজটি খুব ধীর গতিতে হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট