প্রাণহানীর ঝুঁকি কমাচ্ছে অক্সফোর্ডের তৈরি ওষুধ
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ গবেষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম করোনা অতিমারি ঠেকাতে ‘বিশল্যকরণী’র সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। লন্ডনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের তৈরি ওষুধ এমনই কামাল দেখাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষকদের দাবি, করোনা চিকিৎসায় তাদের ভ্যাকসিন মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সক্ষম।
মঙ্গলবার অক্সফোর্ড ইউনির্ভসিটি তাদের ওষুধ ডেক্সামেথেসোনের সাফল্য নিয়ে একটি ফলাফলের রিপোর্ট পেশ করে। সেখানে দাবি করা হয় যে, সহজ ও সাশ্রয়ী এই ওষুধ ভ্যন্টিলেটরে থাকা সংকটাপন্ন করোনা আক্রান্তে মৃত্যু ঝুঁকি এক তৃতীয়াংশ কমিয়ে ফেলতে সক্ষম। একই সঙ্গে অক্সিজেন নেওয়া আক্রান্তদের এক পঞ্চমাংশ হ্রাস হতে পারে।
ব্রিটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালেন্স, এই সাফল্যকে ‘যুগান্তকারী ঘটনা’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজ তাদের তৈরি করোনা প্রতিষেধক মানব শরীরের পরীক্ষমূলকভাবে প্রয়োগ শুরু করবে বলে জানিয়ে ছিল।
গত মার্চে বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে জানা হয়েছিল যে, কোভিড চিকিৎসায় ‘রিকভারি’ নামে ওষুধের ট্রায়েল করা হয়েছে। পাশাপাশি কম ডোজের ডেক্সামেথেসোনও প্রয়োগ করা হয়েছিল। ব্রিটেনের মোট ১৭৫টি হাসপাতালেক ১১,৫০০ করোনা আক্রান্তের মধ্যে এই প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল।
কৃষকদের আয় বাড়াতে এবার কৃষক মান্ডির খালি জমি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের
মোট ২১০৪ জন রোগীকে প্রতিদিন একবার ৬ মিলিগ্রাম করে এই ওষুধ খাওয়ার জন্য দেওয়া হত। বেশ কয়েকজনকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেও দেওয়া হয়। দশ দিন টানা এই ওষুধ দেওয়া হয় এবং ৪,৩২১ জনকে সাধারণ চিকিৎসায় রাখা হয়।
এরপর দেখা যায়, ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি ৪০ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ২৮ শতাংশ । আর অক্সিজেনে থাকা রোগীদের ক্ষেত্রে মৃত্যু ঝুঁকি ২৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হয়েছে।
তবে রিপোর্টে বলা হয়েছে, রেসপিরেটারি সাপোর্টে নেই এমন রোগীদের ক্ষেত্রে কোনও লাভ হয়নি। ভেন্টিলেটারে থাকা ৮ রোগীর মধ্যে ১ জনের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে। একই সঙ্গে ২৫ জন অক্সিজেন গ্রহণ করা রোগীকে বেঁচে ফিরছে কোভিড থেকে।
গবেষকদের দাবি, ব্রিটেনে করোনা মহামারি ছড়িয়ে পড়ার প্রথম ধাপে এই ওষুধ প্রয়োগ করলে অন্তত ৫ হাজার মানুষকে বাঁচানো সম্ভব হত। দরিদ্র দেশগুলির ক্ষেত্রে ওষুধ ব্যবহার করে অনেক সাফল্য পাওয়া যেত।
এই ওষুধের পরীক্ষক দলের প্রধান পিটার হরবি বলেন,’ এটিই এখন পর্যন্ত একমাত্র ওষুধ যা মৃত্যুহার কমানোর ক্ষেত্রে সাফল্য দেখিয়েছে। উল্লেখযোগ্য হারেই তা কমেছে। এ এক যুগান্তকারী সাফল্য।
তবে গবেষকরা জানিয়েছেন, যেসব রোগীর মৃদু উপসর্গ রয়েছে এবং যাদের শ্বাস নিতে বাড়তি সরঞ্জামের প্রয়োজন পড়ে না, তাদের ক্ষেত্রে এ ওষুধ খুব একটা কার্যকরী হবে না।গবেষকরা করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলো বিলম্ব না করে এই ওষুধ প্রয়োগ পরামর্শ দিয়েছেন।