সোমবার থেকে রাজ্যে শুরু হচ্ছে একশো দিনের কাজ

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে একশো দিনের কাজ। গ্রামের মানুষের হাতে টাকা তুলে দিতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।

গ্রামীন সড়ক যোজনা, বাংলার আবাস যোজনানসহ যে একাধিক কাজে একশো দিনের কাজ করানো হয়, সেই কাজ  সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে রাজ্যে। ইতিমধ্যে এই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে নবান্ন থেকে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকের দফতরে।

মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকেই ৫৪ লক্ষ শ্রমিক একেবারেই মুখ থুবড়ে পড়েছে এই করোনা ভাইরাসের আক্রমণ ও লকডাউনের জেরে।

যার ফলেই কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন সচিব রাজেশ ভূষন ভিডিও কনফারেন্স করে নির্দেশ দিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক যে এলাকাগুলিকে হটস্পট এবং ক্লাস্টার হিসাবে চিহ্নিত করেছে, সেগুলি বাদ দিয়ে গ্রিন জোনের মধ্যে থাকা এলাকাগুলিতে এই একশো দিনের কাজ করানো যাবে। কিন্তু যে এলাকায় সিল করা হয়েছে, সেই এলাকায় কোনওভাবে একশো দিনের কাজ করানো যাবে না।

আরও পড়ুনঃ করোনা মোকাবিলায় ত্রাতা অরুপ, নিজ উদ্যোগে চলছে ত্রাণ বিলি

পাশাপাশি রাজ্য সরকারের থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেখানে এই একশো দিনের কাজ করানো হবে সেখানে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা সহ কোভিড-১৯ প্রোটোকল মেনে কাজ করতে হবে।

প্রত্যেকটি জায়গায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং বাইরের এলাকার মানুষকে ওই এলাকায় প্রবেশ করতে দেওয়া যাবে না। স্থানীয় শ্রমিকদেরকেই এই কাজে লাগাতে হবে।

রাজ্যের মুখ্য সচিব রাজিব সিনহা এর মধ্যেই এই নির্দেশিকা জারি করেছেন এবং প্রত্যেকটি জেলা শাসকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন ।

কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী বাংলার আবাস যোজনায় ২০১৯-২০ সালের জন্যও ১০ লক্ষ ৮৩ হাজার বাড়ি তৈরি করার কথা বলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত রাজ্যে ৯ লক্ষ ৮০ হাজার বাড়ি তৈরি হয়েছে। করোনা ভাইরাসের হঠাৎ আক্রমণের জেরে প্রায় এক লাখের কিছু বাড়ি এখনও তৈরি হতে বাকি আছে।

কেন্দ্রীয় সরকারের যে নির্দেশ ছিল, তাতে ৩১ মার্চ শেষদিন ধার্য করা ছিল। সেখানে এখন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই পরিস্থিতিতে বাকি বাড়ি তৈরি করতে কোনও বাধা থাকছে না।

আরও পড়ুনঃ পুলিশ কর্মীদের দেওয়া হবে ঝুঁকিভাতা, সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের

পাশাপাশি নতুন করে ৯ লক্ষ৫৩ হাজার নতুন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামী অর্থবর্ষের জন্য অন্যদিকে বকেয়া রয়েছে অনেক টাকা। যা শ্রমিকরা এখন পর্যন্ত পায়নি। সেই অভিযোগ জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে নবান্ন থেকে।

প্রত্যেকটির বাড়ির জন্য খরচ হয় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা, যার মধ্যে ৪০ শতাংশ ব্যয় করে রাজ্য সরকার এবং ৬০ শতাংশ ব্যয় করে কেন্দ্রীয় সরকার। সারা বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ এবং দেশজুড়ে লকডাউন চলছে, তখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ১৪ এপ্রিল জাতির উদ্দেশ্যে ভাষনে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ৩ মে পর্যন্ত এই লকডাউন।

পাশাপাশি তিনি জানিয়েছিলেন,পরিস্থিতি বুঝে এবং সব দিক খতিয়ে দেখে ২০ এপ্রিল থেকে কিছু কিছু এলাকা সহ রাজ্যে শিথিল করা হয়েছে ‌এই লকডাউন। যাতে দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে শ্রমিকরা নিজের নিজের এলাকায় কাজ করে দুটো পয়সা রোজগার করতে পারেন।

সেই মোতাবেকই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন এবং নবান্ন থেকে নির্দেশিকা জারি হয়েছে। সোমবার থেকে রাজ্যে একশো দিনের কাজ শুরু হবে। গ্রামীন সড়ক যোজনা, বাংলার আবাস যোজনাসহ বেশ কিছু প্রকল্পের কাজে যেখানে তথ্য প্রযুক্তি এবং পাট শিল্পে ২৫ শতাংশ করে কর্মী কাজ করতে পারবেন।

একশো দিনের কাজ শুরু হওয়ার পর, মানুষ কতটা উপকৃত হয় এই লকডাউনের বাজারে সেটাই দেখার।

সম্পর্কিত পোস্ট