লকডাউন ভোজনরসিক বাঙালি, দফারফা চৈত্রের সেল, আসছে নতুন বছর ১৪২৭
রাহুল গুপ্ত
নেই চেনা গড়িয়াহাটের ছবি। কিংবা বেহালার মার্কেট অথবা ধর্মতলার নিউ মার্কেটের ছবি। সব শুনশান , ফাঁকা। নেই দর কষাকষি কিংবা “একদর ” লেখা প্লেট। করোনা আবহে আজ ফুটপাথের বিক্রেতা কিংবা এ.সি. লাগানো বড়ো শোরুমের বিক্রেতা সবাই ঘরবন্দি। লক ডাউন। দফারফা চৈত্রের সেল – আসছে নতুন বছর ১৪২৭
ক্ষতি কয়েকশো কোটি টাকার। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা , বিক্রেতাদের সঙ্গে ফোনে কথা বলে যা জানতে পারলাম তা হচ্ছে এই সময় বাংলা জুড়ে নববর্ষের এক আনন্দঘন মুহূর্তে চূড়ান্ত কেনা বেচা করে আম বাঙালি। নতুন জামা কাপড় পড়তেই হবে। হয়ে আসছে এই প্রথা দিনের পর দিন।
এই সময় শহর কলকাতার মার্কেট অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গার উত্তর থেকে দক্ষিণ উভয়ক্ষেত্রেই চূড়ান্ত ক্রয় বিক্রয় হয়। আর্থিক লাভের মুখ দেখেন ব্যবসায়ীরা।
এই সময় যা কেনাবেচা হয় , সেই জায়গায় আগামী ৪ মাসের আর্থিক সংস্থান হয়ে থাকে বিক্রেতাদের। তা সে ফুটপাথে বিক্রি হোক অথবা দোকানেই বিক্রি হোক না কেনো।
আরও পড়ুনঃ করোনা থেকে সদ্যজাতদের বাঁচাতে অভিনব ফেস শিল্ড, প্রশংসিত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ
আবার এই সময় ফিরে আসে পুজোর দিনে। অৰ্থাৎ ১২ মাসের মধ্যে ৮ মাসের অৰ্থ সংস্থান হয় চৈত্রের সেল ও পুজো থেকে।
কিন্তু এবার করোনার গ্রাসে বিশাল পরিমান ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে বাংলার ক্ষুদ্র থেকে বড়ো সকল প্রকার ব্যবসায়ীদের। যারা সরাসরি বস্ত্র কেনা বেচার সঙ্গে জড়িত তারা বিশাল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
সূত্র অনুযায়ী যদি ফুটপাথের দোকানে ৩ জন করে কর্মচারী কাজ করেন তাহলে ক্ষতির মুখে মালিক সহ ওই ৩ জনের পরিবারের লোকেরা। আবার বড়ো দোকানে যদি অন্তত ৫জন কাজ করেন তাহলে মালিক সহ অন্তত ৬ জনের পরিবারের লোকেরা ক্ষতির মুখের পড়েছেন। সব মিলিয়ে কি ভাবে হবে এই সমস্যার সমাধান উত্তর জানা নেই কারোর।
প্রাক্-বৈশাখ ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে এক নিখাদ বাঙালিয়ানা জড়িত। সঙ্গে হাল খাতা থেকে মিষ্টির দোকানে ভিড় , মন্দিরে ভিড় , ফুলের দোকানে লম্বা লাইন , লক্ষ্মী -গণেশ পুজো নমো নমো করে হয়তো করতেই হবে নিয়ম রক্ষার খাতিরে।
কিন্তু বাঙালি দেখবে না ১৪২৭ এ সেই চেনা ছবি। দুঃখ হলেও কিছু করার নেই বস – বাড়িতেই থাকতে হবে নববর্ষে ভোজনরসিক বাঙালিকে।